‘রিগ্যান (আরিফুলের ডাক নাম) কেমন আছো? এখন মিডিয়াকে অ্যাভয়েড (এড়ানো) করে থাকো। দেখা যাক আল্লাহ ভরসা। তোমার ভবিষ্যত নিয়ে আপাতত চিন্তা করার দরকার নাই। ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তা করার কিছু নাই। আমরা তোমার পাশে থাকবো। তোমার মামলা প্রত্যাহার করে নেবো। একটু সময় দিও। একটু পজিটিভলি দেখতে হবে’- জামিনে বের হওয়ার পর একজনের মোবাইলের মাধ্যমে সাংবাদিক আরিফুলের সাথে কথাগুলো বলেছেন জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন।
তিনি আরও বলেন, ‘যাই হোক, যা ঘটে গেছে তুমিও ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেইখো। তুমি একটু রেস্ট টেস্ট নেও। যাও। একটু নিরিবিলি থাকো।’ মোবাইলের এরুপ কথায় তিনি যে পুরো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায়। আরিফুল এনকাউন্টারে দেওয়ার হুমকি পাওয়ার মতো অপরাধ করেছেন কিনা তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এনকাউন্টারের মানসিকতা আসলে আমাদের ছিল না। ওইভাবে ছিল না।’
গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (আরডিসি) নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাসার দরজা ভেঙে ঢুকে তাকে মারধর করে এনকাউন্টার দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়। সেখান থেকে তাকে তুলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে চোখ বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়। এরপর সাজানো মামলায় ৪৫০ এমএল দেশি মদ ও ১০০ গ্রাম গাঁজা দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক বছরের সাজা প্রদান করা হয়।
মোবাইলে ফোনালাপের ব্যাপারে আরিফুল ইসলাম জানান, ‘কারাগার থেকে বের হওয়ার পর জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন এক ব্যক্তির মাধ্যমে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় আমি তার সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি আমাকে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চুপচাপ থাকতে বলেন। আরিফুল জেলা প্রশাসকের কাছে চোখ বাঁধা অবস্থায় স্বাক্ষর নেওয়া চারটি কাগজ ফেরত চান।
জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমাকে ফেরত দেবো।’ আরিফুলের এনকাউন্টার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসককে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আসলে এনকাউন্টারের মানসিকতা আমাদের ছিল না।’ আমি (আরিফুল) আমার ভবিষ্যত নিয়ে খুবই চিন্তিত প্রশ্নের উত্তরে ডিসি বলেন, ‘তোমার ভবিষ্যত নিয়ে এতটা চিন্তিত হওয়ার কিছু নাই। ভালো থাকবা ইনশাল্লাহ।’ আরিফুলের মামলা প্রসঙ্গে ডিসি বলেন, ‘তোমার মামলা প্রত্যাহার করে দেবো, সমস্যা নাই। একটু সময় দিও। একটা দুইটা শুনানির সময় লাগবে। তোমার চাকরির (একটি বেসরকারি কলেজে) ব্যাপারেও আমি দেখবো। চাকরির ব্যাপারে কোনও টেনশন করো না।