নূরে আলম সিদ্দিকী:১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মতো অখ্যাত অজপাড়াগাঁয়ে জজকোর্টের চাকরিজীবী শেখ লুৎফর রহমানের ঔরসে ও মা সায়েরা খাতুন-এর গর্ভে জন্মলাভ করা সেই ছোট্ট শিশুটি কালের স্রোতধারায় একটি জাতির জনক হয়ে উঠবেন, এটি ভাবলে চিত্ত শুধু উদ্বেলিতই হয় না, যেকোনো হদয়কেই বিস্ময়াভিভূত হতে হয়। বাংলাদেশ, শেখ মুজিব ও স্বাধীনতা- একটি আরেকটির পরিপূরক। শব্দ তিনটির সম্পৃক্ততা এতটাই নিবিড় ও ঐতিহাসিক এবং সকল বিশ্লেষণে এতটাই উদ্ভাসিত, প্রদীপ্ত ও প্রোজ্জ্বল যে, শতাব্দীর পর শতাব্দী আলোক বিচ্ছুরিত করতে থাকবে। পরাধীনতার বক্ষ বিদীর্ণ করে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে আনার মহান ব্রতে উজ্জীবিত হয়ে গণতান্ত্রিক ধারায় ছাত্রলীগ যে পথ বিনির্মাণ করেছে, তার মূর্ত প্রতীক ছিলেন শেখ মুজিব। আমি আমার বহু নিবন্ধে এই শাশ্বত সত্যটিকে বারংবার উল্লেখ করেছি। সাংবাদিক ও শাসনতান্ত্রিক রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় যে কথাটি মুজিব ভাই উচ্চারণ করতে পারতেন না বা উচ্চারণ করলে তার রাজনীতির বিকৃত অবয়ব এঁকে জনগণকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব হতো, বিরাট ও অলঙ্ঘনীয় গণতান্ত্রিক দায়িত্ববোধ থেকেই মুজিব ভাই সেই সমস্ত উক্তি ও উচ্চারণ থেকে বিরত থাকতেন। আর সেগুলো অকুতোভয়ে উচ্চারিত হতো ছাত্রলীগের কণ্ঠে। তাই ছাত্রলীগকে শেখ মুজিবের হৃদয়ের নিভৃত কন্দরের অনুরণন, চেতনার প্রতিধ্বনি এবং নাড়ীর স্পন্দন বললে অত্যুক্তি হবে না।
রাজনীতিতে শেখ মুজিবের হাতেখড়ি গণতন্ত্রের মানসপুত্র অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর হাত ধরে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মানিক ভাই ও মুজিব ভাইকে পুত্রপ্রতিম ভাবতেন। তাঁর হদয়ের একান্ত গভীরে এ দু’জনের স্থান ছিল কল্পনাতীত বিশ্বাসের আবীরে মাখা। জনাব শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৬৩ সালে যখন বৈরুতে চিকিৎসা করতে যান, তখন তাঁর ঘনিষ্ট সহচরেরা আবেগাপ্লুত হৃদয় নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করেছিলেন- স্যার, আমাদের জন্য কী রেখে যাচ্ছেন? শহীদ সোহরাওয়ার্দী তাঁর স্বভাবসুলভ শান্ত ও স্নিগ্ধ চিত্তে দৃঢ় প্রত্যয়ে বলেছিলেন- একটি কলম আর একটি মাঠ রেখে গেলাম। কলম হলো ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাণপুরুষ তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। আর মাঠটি হলো তাঁরই হাতেগড়া বিশ্বাস ও আস্থার ফসল শেখ মুজিব। আজও এ নিয়ে কোন গবেষণালব্ধ বিশ্লেষণ আমাদের সামনে আসেনি। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যে কোন গবেষণা, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণে দিগন্ত বিসৃ্তত আকাশের নিষ্কলুষ ও নির্মল সূর্যরশ্মির মতো প্রদীপ্ত আলোকচ্ছটায় এই সত্যটাই জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠবে। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর দু’জন শিষ্যই (মানিক ও মুজিব) বাংলার ইতিহাসে এতটাই ভাস্বর যে, আজকে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত, তাঁদের একজন বাংলা ও বাঙালির শাশ্বত নেতাই শুধু নন, জাতির পিতা। তাঁর আন্দোলনের সুদীর্ঘ পথে শুধু সামরিক শক্তির নির্যাতনই নয়, তথাকথিত বাম রাজনীতির নির্মম কটাক্ষ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিষ্ঠুর কষাঘাতে তাঁকে বহুবার জর্জরিত হতে হয়েছে। অনেক দুঃখ, অনেক বাধা, অনেক বিপত্তি, চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করতে গিয়ে তাঁকে শুধু পাকিস্তানের মূল শাসক সামরিক জান্তার নির্যাতন-নিগ্রহ ও নির্মমতাকেই সহ্য করতে হয়নি, বাম রাজনীতির ধারার তথাকথিত প্রগতিশীলদের অযাচিত বিরোধিতার মুখে তাঁকে অজেয় সেনাপতির মতো দৃঢ় চিত্তে লড়াই করতে হয়েছে। আল্লাহ তাঁর সহায় ছিলেন। প্রতিটি যুদ্ধেই তিনি বিজয়ী হয়েছেন। যারা তাঁকে আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করেছেন, তারা কালে কালে পর্যুদস্ত হয়েছেন এবং উপসংহারে বিজয়ের কেতন উড়িয়েছেন শেখ মুজিব।
মনে হয়, এই তো সেদিনের কথা। মুজিব ভাই যখন ৬ দফা দিলেন, পাকিস্তানের আইয়ুব সরকার-বিরোধী দলসমূহ ছাড়াও রাজনৈতিক অঙ্গনে জনপ্রিয় ও মারাত্মক প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব আযম খান, আজগর খান, নূর খানের মতো জনপ্রিয় সামরিক ব্যক্তিত্বরাও আইয়ুবের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্যমঞ্চে বিরাট প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়েছিল। আইয়ুব খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে যে বিরোধীদলীয় মোর্চা গঠনের উদ্যোগ গৃহীত হয়, সেরূপ একটি বৈঠকে শেখ মুজিব ৬ দফা পেশ করে বলেন- আন্দোলনের জন্য আন্দোলন আর নয়। এক সামরিক শাসককে উৎখাত করে নতুন লেবাসে আরেকটি সামরিক শাসককে ক্ষমতাসীন করার ভ্রান্ত ও ভুল রাজনীতির পাদপীঠে শেখ মুজিব আর পা রাখবে না। এই বলে তিনি ৬ দফার কর্মসূচিটি ওই বৈঠকে পেশ করেন এবং প্রত্যয়দৃঢ় চিত্তে তিনি ঘোষণা প্রদান করেন যে, ৬ দফা পূর্ব পাকিস্তানের ম্যাগনাকার্টা। এর বাইরে কোন অনর্থক আন্দোলনের সঙ্গে শেখ মুজিবের অংশীদারিত্ব থাকবে না। আজকের প্রজন্মের জন্য এটি উল্লেখ করা অতিশয় প্রয়োজন, তখন শেখ মুজিব ছিলেন তখনকার পূর্ব-পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। যার সভাপতি ছিলেন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ। তাঁর প্রদত্ত ৬ দফা বিরোধী দলীয় মোর্চার আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে গৃহীত হয়নি। এমনকি সমগ্র পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান, সাধারণ সম্পাদক ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী জহিরউদ্দিন সাহেব। পাকিস্তানভিত্তিক কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি হিসেবেও ৬ দফা গৃহীত না হলে তিনি পশ্চিম পাকিস্তান হতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং প্রাদেশিক আওয়ামী লীগের একটি বর্ধিত সভা আহ্বান করেন। সেই সভার উপক্রমণিকায় ৬ দফাটি পেশ হলে ৬ দফার নানা দিক নিয়ে প্রচণ্ড বাক-বিতণ্ডা হয় এবং শেষ পর্যন্ত সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটেও পাশ হতে পারেনি।
এটি মুজিব ভাইয়ের জন্য একটি মারাত্মক আঘাত হলেও তিনি অবদমিত হওয়ার পাত্র ছিলেন না। বরং তিনি কৌশল অবলম্বন করে ছাত্রলীগের তদানীন্তন সভাপতি সৈয়দ মযহারুল হক বাকী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক- এই ছাত্রলীগ নেতত্বের হাতে ৬ দফার সকল দায়দায়িত্ব তুলে দেন। এবং ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ শুধু কর্মসূচিটিকে সাদরে গ্রহণই করেনি, এই বাংলার কন্দরে কন্দরে প্রান্তিক জনতার হদয়ে যে বীজ বপন করেন, তাই স্বায়ত্বশাসন থেকে স্বাধিকার, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার রূপ পরিগ্রহ করে। এরই মধ্যে শেখ মুজিব মতিঝিলের ইডেন হোটেলে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করেন। সেই কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা পেশ করলে তা অনুমোদিত হয় এবং ওই অধিবেশনে শেখ মুজিবুর রহমান সভাপতি ও তাজউদ্দীন আহমেদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক, এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও রাজশাহীর মুজিবুর রহমান সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, শেখ মুজিব যখন ৬ দফা কর্মসূচিটিকে নিয়ে কখনো ট্রেনে, কখনো মটরযোগে, কখনো আকাশপথে, কখনো নদীপথে পুরো বাংলাদেশ চষে বেড়াচ্ছেন, তখন প্রতিটি জেলাতেই সভার পরিসমাপ্তির পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছিল। আর আওয়ামী লীগের একগুচ্ছ আইনজীবী প্রত্যেক জেলাতেই তাঁর সপক্ষে দাঁড়িয়ে নেতার জামিন নিচ্ছিলেন।
জামিন ও গ্রেফতারের এই আলো-আঁধারি খেলায় ছাত্রসমাজ ও প্রান্তিক জনতার একটি অংশ কেবল উজ্জীবিত ও উচ্ছ্বসিতই হচ্ছিল না, ৬ দফার সপক্ষে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হচ্ছিল। আইয়ুব খানের সরকার এবং তার লাঠিয়াল মোনায়েম খানের তাতে টনক নড়ে। তারা আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করেন এবং পূব বাংলার প্রিয় নেতা শেখ মুজিবকে ডিপিআরে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবরুদ্ধ করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, যথা- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, খন্দকার মোশতাক, তাজউদ্দীন আহমেদ, এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্তরীণ করেন। এরপরই রাজনৈতিক খেলাটি জমে ওঠে।
মুজিব ভাইয়ের সঙ্গে কারাগারের প্রথম সাক্ষাতে তিনি হাস্যোচ্ছলে আমাকে বলে ওঠেন, বারেবারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এইবার ঘুঘু তোমার বধিবে পরাণ। আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেন, এবার হয়তো অনেকদিন তোর জেল খাটতে হবে। তবে ভয় কী তোর- আমি তো আছি। তিনি যে দেওয়ানীতে থাকতেন, তার অতি সন্নিকটে ছিল ২০ সেল। তাই রাতে লকআপের আগে পর্যন্ত সার্বক্ষণিক তার সান্নিধ্য পেতাম। এদিকে ১০ সেল হতে মোয়াজ্জেম ভাইকেও আমাদের ২০ সেলে পাঠিয়ে দেয়া হলো। এটি আমাদের সকলের জন্য শাপে বর হয়েছিল। আমাদের অলস সময় কাটানোর জন্য ব্রিজ খেলার একটা টীম তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মোয়াজ্জেম ভাই আমাকে ফুসলালেন, মুজিব ভাইকে ব্রিজ খেলার জন্য উৎসাহিত করতে। প্রচেষ্টায় কাজ হলো। বস্ রাজী হলেন। দুপুরে খেলা শুরু হলো। মুজিব ভাই, আমি, মোয়াজ্জেম ভাই ও নূরুল ইসলাম ভাই (পোষ্টার নুরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক)। এভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন খেলার মাঝামাঝি অবস্থায় মুজিব ভাই বলে উঠলেন- ব্রিজ চলবে না, চলবে আমার ৬ দফা। আমরা তো স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। ব্রিজ খেলার মধ্যে আবার ৬ দফা আসলো কোথা থেকে ! মুজিব ভাই প্রচণ্ড শব্দে হেসে বললেন- আমি ভালো কার্ড পেয়ে খালি হুতায়ে (ডামি হয়ে) যাব, আর মহা আনন্দে আমার কার্ডের জোরে খেলবে আর আমি চেয়ে চেয়ে দেখব- সেটা আর হতে দেব না। এখানে পাঠককে জানিয়ে রাখা দরকার, মুজিব ভাই খুব ভালো কার্ড পেতেন এবং স্বাভাবিকভাবেই জেতার আগ্রহও ছিল প্রচণ্ড। তাই নিজে ডামি হয়ে হলেও আমাকে দিয়ে খেলাতেন। ফলে তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অতএব এরপর ব্রে খেলা শুরু হলো। কী আশ্চর্যজনক ঘটনা, ব্রে-তেও তিনি এত সুন্দর কার্ড পেতেন যে, তাঁকে হারানোই যেত না। ব্রে করাই সম্ভব হতো না।
একদিন আমি মোয়াজ্জেম ভাইকে বললাম, মোয়াজ্জেম ভাই, নূরুল ইসলাম ভাই ও আমি যোগসাজশ করে খেলব। যাতে বসকে চেপে ধরে ব্রে করা যায়। কিন্তু কপাল মন্দ, মোয়াজ্জেম ভাই অথবা নুরুল ইসলাম ভাইয়ের কেউ একজন যোগসাজশ করার বিষয়টি নেতার কাছে ফাঁস করে দেয়। পরদিন খেলতে গেলে বস মুচকি হেসে বললেন- আঁতাত করে আমাকে হারাতে চাও? আঁতাতের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়াই তো আমার রাজনীতি। এবং তারই সুস্পষ্ট কমসূচি ৬ দফা। বিকেলে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে দেওয়ানীর আমতলার ছায়ায় চেয়ারে বসে তিনি প্রায়ই বলতেন, এবার তো আমি ৬ দফা কর্মসূচি দিয়ে বাংলার মানুষকে তাদের মুক্তির সনদ দিয়ে কারারুদ্ধ হয়েছি। জেলখানায় আমার মৃত্যু হলেও তা হবে বাংলার মুক্তির আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ। কিন্তু ৫৮ সাল থেকে ৬২ সাল পর্যন্ত আইয়ুব খান আমাকে বারবার কারারুদ্ধ করেছে, ১৮ টি দুর্নীতির মামলা দিয়েছে। সেদিন আমি মৃত্যুবরণ করলে আমার চরিত্রের উপর একটু হলেও কালো কালিমার দাগ লাগত। আমি তঁর মুখের থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলেছিলাম- আর আজ আপনি বাংলার মানুষের হৃদয়ের সিংহাসনে মুকুটহীন সম্রাট। প্রান্তিক জনতা শোষণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আপনাকে প্রধান সেনাপতি মনে করে। তাঁর চেহারার দিকে চেয়ে দেখেছিলাম, চোখগুলো যেন জ্বলজ্বল করছিল।
গভীর মমতা ও শ্রদ্ধায় তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি অভিভূত হয়েছিলাম। এবং বিদগ্ধ চিত্তে উপলদ্ধি করেছিলাম, ৬ দফা কর্মসূচির বাস্তবায়নের মধ্যেই রাজনীতিতে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে। যদিও সে পথ কন্টকাকীর্ণ, দুর্গম ও বিস্তীর্ণ। হয়তো-বা সেই পথপরিক্রমণে বঙ্গবন্ধু ও আমাদের মতো অনেকেরই প্রাণের অর্ঘ্য দিতে হতে পারে। কিন্তু পথ এই একটাই। মুজিব ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে সেদিন ভেবেছিলাম, এই সেই নাবিক, যার শক্ত হাতে হালধরা তরণীটিকে নোঙর করতে হবে সাফল্যের স্বর্ণালী সৈকতে। এর আর কোন বিকল্প নেই, নেই কোন ব্যতিক্রম।