কিশোরগঞ্জ: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে এমন সন্দেহভাজনদের হোম কোয়ারেন্টাইনে না রেখে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশ পেয়ে এখন পর্যন্ত জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলায় দুইটি স্কুলে ও ভৈরব উপজেলার ট্রমা হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্প খোলা হয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব ক্যাম্পে তারা ১৪ দিন আইসোলেশনে বা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকবেন। স্বাস্থ্য বিভাগ কর্মী ও পুলিশের সহযোগিতায় এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
সোমবার জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মো: সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি জানান, এ ব্যাপারে কমিটি সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় যখন যা করা দরকার তাই করা হচ্ছে ও করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন, তাদের অনেকেই স্বাস্থ্য বিভাগের বিধি নিষেধ মানছেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকা কেউ কেউ বাড়ির বাইরে চলাফেরা করছেন। পরিবারের অন্য সদস্যের সংস্পর্শেও যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের পক্ষেও সবসময় নজরদারি করা সম্ভব হচ্ছে না। এমন খবরে এলাকাবাসী উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। এ উদ্বেগ থেকে রক্ষা পেতে রাষ্ট্রপতি এমন নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো: মুজিবুর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। তবে সোমবার পর্যন্ত জেলার হাওর অধ্যুষিত উপজেলা অষ্টগ্রামের আব্দুল্লাপুরের দুইটি স্কুল ও ভৈরবের ট্রমা হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। অষ্টগ্রামে যে ৯ জন বিদেশফেরত হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তাদের মধ্যে আটজনকে আব্দুল্লাহপুর কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকি একজনকেও নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আর ভৈরবের ৫৩ জনকে ট্রমা হাসপাতালের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মুজিবুর রহমান আরো জানান, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালু করতে হলে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি সবার সমন্বয় দরকার।
তিনি জানান, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে অবস্থিত সকলের জন্য খাদ্য, পানি, চিত্তবিনোদনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রাখতে হয়। কিন্তু সেই সুবিধাগুলো এখনো সেখানে নিশ্চিত করা যায়নি।
তবে সুবিধাগুলো দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত সমগ্র জেলায় ১২৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ভৈরবেই ৫৩ জন রয়েছেন। এছাড়া কিশোরগঞ্জ সদরে ১৮ জন, কুলিয়ারচরে ১০ জন, অষ্টগ্রামে ৯ জন ও মিঠামইনে দুইজন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন। বাকিরা আছেন নিকলী, তাড়াইল, ইটনা ও কটিয়াদী উপজেলার।