করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে এই ভাইরাস বাংলাদেশে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার এক গণবিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ বলেছে যে বিদেশ প্রত্যাগত নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা ‘অতীব জরুরী’।
এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সারা বিশ্বে হোম কোয়ারেন্টিন অর্থাৎ নিজ বাড়িতে সার্বক্ষণিক আলাদা হয়ে থাকাকে একমাত্র কার্যকর উপায় হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আট জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সরকারিভাবে শনাক্ত হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে যে প্রথমে আক্রান্ত তিন জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেলেও নতুন করে আরও পাঁচ জন শনাক্ত হয়েছেন।
তাই এই ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়ার কথা জানিয়ে এই গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিরা ১৪ দিন ঘরের বাইরে বের হবেন না এবং নিজ বাড়ির নির্ধারিত একটি কক্ষে অবস্থান করবেন।
আর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এই হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে।
এছাড়া, করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় জাতীয়, বিভাগীয়, সিটি কর্পোরেশন এলাকা, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে কমিটি গঠন করার কথা বলা হয়েছে।
ওই কমিটির কাজ হবে সম্প্রতি বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের বাড়ি চিহ্নিত করা এবং হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিরা যেন ১৪ দিন ঘরের বাইরে বের না হন, তা তদারকি করা।
জানুয়ারীতে চীনের উহান থেকে যাদের ফিরিয়ে আনা হয় তাদের কারও মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
কমিটির সদস্যরা সেই তথ্য জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা চেয়ারম্যান, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন।
হোম কোয়ারেন্টিন থাকা ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব উক্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসতে পারবেন না।
বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সরকার গঠিত কমিটি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি যেমন: পৌর মেয়র, পৌর কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বার, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য সহকারী, কমিউনিটি হেলথকেয়ার প্রোভাইডার, পরিবার কল্যাণ সহকারী, পরিবারকল্যাণ পরিদর্শক, গ্রাম পুলিশ এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রয়োজনে সম্পৃক্ত করতে পারবেন।
ইতালি থেকে ফেরা প্রবাসীদের আশকোনার হজক্যাম্পে আনা হলেও তারা সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানান।
হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা কেউ অসুস্থ হলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এবং প্রয়োজনে স্থানীয় সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করবেন। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যদি কোয়ারেন্টিনে থাকা কোন ব্যক্তি এসব নিয়ম ভাঙেন, তাহলে বাংলাদেশের সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : বিবিসি