গাজীপুর: করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ইতালি থেকে সদ্য দেশে আসা প্রবাসীরা কোয়ারেন্টিনে রাখায় হাসপাতালের তালা ভেঙে বিক্ষোভ করেছে। চার জনের জ্বর বেশী হওয়ায় তাদের উত্তরা কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রোববার বিকালে গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে ’মেঘডুবি ২০শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’-এর কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে বাইরে এসে বিক্ষোভ করে তারা বলে জানায় প্রশাসন।
পরে তাদের চারজনের শরীরে জ্বর অনুভূত হওয়ায় ঢাকার উত্তরায় স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাকী।
দেশে ফেরার পর গত শনিবার রাতে ৪৮ জনকে গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে ’মেঘডুবি ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য নেওয়া হয়।
তাদের আগে শনিবার সকালে ইতালি থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীরাও ঢাকায় হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টেনে রাখার ব্যবস্থা করায় বিক্ষোভ দেখায়। পরে তাদের পরীক্ষা-নিলীক্ষা শেষে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেয় প্রশাসন। এ ঘটনার পর এই ৪৮ জনকে গাজীপুরের এই মা ও শিশু কেন্দ্রে রাখা জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাকী জানান, প্রবাসীরা বিদেশ থেকে দেশের জন্য অনেক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর কথা পেড়ে তাদের কোন অপরাধে মেঘডুবি হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে জানতে চায়।
“এসব বলে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই হাসপাতালের ভেতরের কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙে হাসপাতাল চত্বরে বের হয়ে আসেন তারা।”
পূবাইল থানার ওসি মো. নাজমুল হক ভুইয়া জানান, শনিবার বিকালে বিক্ষোভ ও ভাংচুরের খবর পেয়ে সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার পর হাসপাতালের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে।
চার জনের জ্বর
গাজীপুরের সিভিল সার্জন খায়রুজ্জামান বলেন, “চারজনের দেহে লক্ষণীয় মাত্রায় জ্বর থাকায় আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাদেরকে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা এখনও ভালো আছে। তাদের আর কোন সমস্যা নেই।
“এখান থাকা ইতালি প্রবাসীরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলছেন। তাদের বিষয়ে তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত চায়। তবে তাদের বেলায় সরকারি সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কিছু করার নেই।“
একজন মেডিকেল অফিসার তাদের পর্যবেক্ষণ করছেন। প্রবাসীদের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়েছে। মশার উপদ্রব থেকে রক্ষায় মশারি ও কয়েল দেওয়া হয়েছে। প্রতি কক্ষে ৩/৪ ফুট দূরে দূরে ১০ জন থেকে ৬ জন করে রাখা হয়েছে। এছাড়া এক প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তানকে আলাদা করে এক কক্ষে রাখা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।