ফেনী: ফেনীতে করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিদেশফেরত ১০ ব্যক্তিকে পরিবারসহ ঘরোয়া কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গত দু’দিনে ওই ১০ জন দেশে ফিরেছেন। জেলা সিভিল সার্জন মো. সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন বলেন, মঙ্গলবার ইতালি থেকে ৮ জন, বুধবার কুয়েত ও চীন থেকে একজন করে দু’জন ব্যক্তি ফেনীতে এসেছেন। এদের মধ্যে ফুলগাজী উপজেলার তিনজন, ফেনী সদর উপজেলার তিনজন, দাগনভূঁঞা ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় দু’জন করে রয়েছে। বিমানবন্দরে এ ১০ ব্যক্তির কারো শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে তাদের ব্যাপারে ঢাকার সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানো হয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এসব প্রবাসীদের নাম ঠিকানা নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রত্যেককে ১৪ দিন পারিবারিক কোয়ারেন্টিনে থাকা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন বলেন, কোয়ারেন্টিন হচ্ছে ১৪ দিনের বিশেষ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা।
বিদেশ থেকে এসেছে এমন ব্যক্তিকে বাথরুমসহ এক কক্ষে রাখা হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়। তাই এ বিশেষ ব্যবস্থা জনস্বার্থে প্রবাসীদের মেনে চলা উচিত। কোয়ারেন্টিনে থাকার সময় ১৪ দিনের মধ্যে তাদের কারও শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা গেলে সরকারিভাবে তাদের সবধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ইকবাল হোসেন ভূঁঞা বলেন, ফেনী জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আটটি আলাদা কক্ষ নিয়ে সন্দেহভাজন রোগীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার করা হয়েছে। আইসোলেশন সেন্টারে ওঠার সিঁড়িও আলাদা রাখা হয়েছে।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আবুল খায়ের মিয়াজী জানান, আইসোলেশন সেন্টার থাকলেও করোনাভাইরাস সম্পর্কে চিকিৎসক, নার্স বা কর্মীদের এখনো কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া হয়নি। জেলায় চিকিৎসক, নার্স বা কর্মীদের এবং রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামও পাওয়া যায়নি। চিকিৎসা সরঞ্জাম জরুরি ভিত্তিতে পাওয়ার জন্য সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি দেয়া হয়েছে।
জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ৩০ বেড, ফেনী ট্রমা সেন্টার ৩০ বেড, সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ বেড, ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ করে ২৫ বেডসহ মোট ১০৫ বেডের আইসোলেশন কর্নার করা হয়েছে।
এছাড়া ভারতীয় সীমান্তবর্তী ফেনী পরশুরামের বিলোনিয়া স্থলবন্দরে আগত যাত্রীদের মেডিকেল চেকআপ করার জন্যে একজন চিকিৎসক ও ৩ জন সহকারি সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রান্ত বিষয় সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।