করোনা রোগী শনাক্তের খবরে অনেকটা থমকে গেছে বাংলাদেশ। চার দিকে মানুষের চোখে মুখে সতর্কতার ছাপ। নিজের ও পরিবারের সুরক্ষায় মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, হ্যান্ডওয়াশ কিনতে ভিড় করছেন দোকানে। কেউ পাচ্ছেন, কেউ পাচ্ছেন না। গণপরিবহনে যাত্রী তুলনামূলক কম। যারা যাচ্ছেন, তাদের অনেকের মুখে মাস্ক। শেয়ার বাজার, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কমেছে ভিড়। হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনরা সতর্ক।
শপিং মলে আসা ক্রেতারাও চলছেন সতর্ক হয়ে। রোববার দেশে তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের তথ্য জানানো হয় সরকারের তরফে। তবে গতকাল পর্যন্ত নতুন আর কোন রোগী সনাক্ত হয়নি। ইতালি ও স্পেন থেকে আসা দুই যাত্রীকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের গায়ে জ্বর থাকায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে আরও চারজনের নমুনা নেয়া হয়েছে পরীক্ষার জন্য। আইইডিসিআ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আক্রান্ত কোন দেশ থেকে যারাই আসবেন তাদের ১৪ দিন সেলফ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। করোনা সতর্কতার অংশ হিসেবে কাতার বাংলাদেশসহ ১৪ টি দেশের ওপর ভ্রমণ সতর্কতা দিয়েছে। অব্যাহতভাবে যাত্রী কমে যাওয়ায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহের ফ্লাইট অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দফায় দফায় বৈঠক করেন কর্মকর্তাদের সঙ্গে। রোববার রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়।
এদিন সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। ওই অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় আমন্ত্রিণ বিদেশী অতিথিরাও আর আসছেন না। মুজিব জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে বড় জনসমাগম না করার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪০০ শয্যাসহ সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড বা কর্ণার করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে। করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। খেলাধুলাসহ সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত করার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে বলা হয়েছে এখনও স্কুল কলেজ বন্ধের মতো পরিস্থিতি হয়নি। সামনে এমন কোন পরিস্থিতি হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে গতকাল রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা, শপিং মল, গণপরিবহনে অন্য দিনের চেয়ে কম সমাগম দেখা গেছে। রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে যাত্রীদের মাঝে সতর্কতার চিত্র দেখা গেছে। অনেকের মুখে ছিল করোনার আলোচনা। রাজধানীতে গণপরিবহনে যাতায়াতকারী যাত্রীদের অনেককে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়।
চার দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে: বিদেশফেরত বিশেষ করে করোনা ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত ইতালি, ইরান,দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মতো দেশগুলো থেকে আসা বাংলাদেশিদের বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তাদের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রয়োজন হলে কোয়ারেন্টিনে (সংক্রমণরোধে আলাদাভাবে) রাখার ব্যবস্থাও নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি এ কমিটির সভাপতি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে মন্ত্রী বলেন, সচেতনতামূলক কার্যক্রম আমরা আগে থেকেই নিয়েছিলাম। এখন নতুন করে পোস্টার ও ব্যানার তৈরি করা হচ্ছে। আগামী দু’দিনের মধ্যে তা সারা দেশে পৌঁছে দেয়া হবে। খেলাধুলা, ধর্মীয় বা সামাজিক প্রোগ্রাম সীমিত আকারে করার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এগুলো না করলেই ভালো এ বিষয়ে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাবল টিভিতে স্থানীয়ভাবে প্রচারণা চালানোরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া একটি চার্চ থেকে এবং ইরানের একটি মসজিদ থেকে করোনা ছড়িয়েছে। এ থেকে আমরা শিক্ষা নিতে চাই। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম হঠাৎ বৃদ্ধির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা আমরা নেবো।
করোনা প্রিভেন্ট করার (প্রতিরোধ) বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশে আসছেন, আমি বলবো, এই মুহূর্তে আপনারা দেশে আসবেন না। নিজ নিজ স্থানে থাকুন। এটা আগেও আমরা বলেছি। অ্যাম্বাসেডরদেরও (রাষ্ট্রদূত) আমরা নির্দেশনা দিয়েছি- তাদের জন্য সেফ জোনের ব্যবস্থা করতে। মন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে তারা বেশি যাবেন, আমরা সেটাও চাই না। সবাইকে সেল্ফ- কোয়ারেন্টিনে (স্বেচ্ছায়) থাকার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে খবর দেয়া হয়েছে, যারা আসবেন (বিদেশফেরত) সেল্ফ- কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। তার যারা প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন-বিষয়টি আমাদের জানাবেন। আমরা তাদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে দেবো। ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দর্শক সমাগম যেন না হয়, সে বিষয়ে আমরা বলেছি। মন্ত্রী বলেন, জনগণকে বলবো, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটা হবে, আমরা আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। আমরা যদি সকলে মিলে কাজ করি, প্রটেকটিভ মেজারগুলো মেনে চলি, পাবলিক গ্যাদারিং পরিহার করি- যেগুলো আমরা বলে আসছি, আশা করি করোনা ভাইরাস আমরা প্রতিরোধ করতে পারবো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ এখন স্বাভাবিকভাবে চলবে। তবে সারা দেশের স্কুল ও কলেজগুলোতে হাত ধোয়ার জন্য সরকারিভাবে বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও সাবান প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ রোগে মৃত্যুঝুঁকি ইবোলার চাইতে অনেক কম, শতকরা তিন শতাংশেরও কম। তবে এ ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোয়াসহ প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থাগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে। স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তাদের পরিবারগুলোতেও সতর্কতামূলক বার্তা পৌঁছাতে হবে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে আপাতত স্কুল স্বাভাবিকভাবে চলবে। তবে পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চারটি দেশের অন অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত রয়েছে। আরো বেশি ছড়াইলে বন্ধ করা হবে ভিসা। তবে ফ্লাইট বন্ধের চিন্তা নেই এই মুহূর্তে।
করোনা আক্রান্ত একজনের জন্য ৪০ জন কোয়ারেন্টিনে: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত একজনের সংস্পর্শে আসায় ৪০ জনকে বিভিন্ন স্থানে নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সচিব এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব। ৮ই মার্চ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন সম্প্রতি ইতালি ফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কী না, সে বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান আসাদুল ইসলাম।
করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবশ্যই আছে। এ আশঙ্কা রোধের জন্য আমরা ব্যবস্থাও করেছি। তাদের কন্ট্রাক্ট ট্র্যাকিং করে কোথায় গেছে, কাদের সঙ্গে মিশেছে-সবকিছু করে আমরা প্রথমজনের জন্য ৪০ জনকে ট্র্যাক করেছি। কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, তাদের আমরা ফার্স্ট কন্ট্রাক্ট ধরবো, এক্সটেন্ডেড কন্ট্রাক্ট ধরবো, তাদের কীভাবে কোয়ারেন্টিল করবো- সবকিছু ফলো করেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একজনের জন্য ৪০ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, অন্য দুজনের জন্য কতজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে- এ বিষয়ে সচিব বলেন, এটার কোনো গড় অঙ্ক নেই। কার সঙ্গে মিশেছেন, কন্ট্রাক্ট হয়েছে, তাদের লোকাল লেভেলে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এটার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারবো না। আক্রান্ত দেশগুলো থেকে মানুষ আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কী না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই সব বিষয়ে আমরা প্রথম থেকেই অ্যাডভাইস করছিলাম। যেখানে বেশি প্রাদুর্ভাব হয়েছে সেখান থেকে যেন কম লোক আসে। এমনকি আমাদের যারা ওসব দেশে আছে তারাও যাতে যাতায়াত রেস্ট্রিকটেড করে দেয়, সে বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছিলাম। আসাদুল ইসলাম বলেন, যেসব দেশে বেশি আক্রান্ত সেই সব দেশের অনঅ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করেছি। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরামর্শ দিয়েছি-এগুলো করার দায়িত্ব পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের।
আইইডিসিআর’র ব্রিফিং: গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সম্মেলন কক্ষে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কিত ব্রিফিংয়ে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে চীনের উহান যেখানে প্রথমে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। সে এলাকা থেকে আগতদেরকেই শুধু কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।
অন্যান্য দেশে করোনা ভাইরাসের রোগী পাওয়া গেলেও সেখান থেকে করোনা ভাইরাস উৎপত্তি হয়নি। এ কারণে উহান ছাড়া চীনের অন্য কোথাও থেকে আগত কিংবা অন্য কোনো দেশ থেকে আগতদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়নি। মহাপরিচালক জানান, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত যাত্রীদের ফ্লাইটে হেলথ কার্ড ও সেলফ ডিক্লারেশন ফরম দেয়া হয়। সেখান থেকে জানা যায় তিনি কোথা থেকে এসেছেন। নিকট অতীতে তিনি উহানে গেছেন কিনা কিংবা কারও সংস্পর্শে এসেছেন কিনা। তবে চীনের অন্য প্রদেশ কিংবা অন্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে করোনার লক্ষণ বা উপসর্গ পেলে বিকল্প উপায়ে তাকে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত করেছে আইইডিসিআর। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালি ফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজন ছাড়া আরও দুজনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আর কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত তিনজন ভালো আছে। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের নমুনা সংগ্রহ করেছি, তবে তাদের কারোর মধ্যেই করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। তার মানে এ পর্যন্ত সর্বমোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা তিনজনই। এক প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, শনাক্তকারীরা দেশে ফেরার ৪ থেকে ৭ দিনের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে অত্যাবশকীয় নয় এমন সব জাতীয়-আন্তর্জাতিক সভা-সমাবেশ-সম্মেলন আয়োজন না করাই ভাল বলে পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর’র পরিচালক। অতি বয়স্ক, দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতায় (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, অ্যাজমা, কিডনী সমস্যা, ক্যানসার প্রভৃতি) ভুগছেন এমন ব্যক্তিগণ ভীড় এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেয়া হয়। নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে দুই হাত ধোবেন (অন্তত ২০ সেকেন্ড যাবত)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। কারো সঙ্গে হাত মেলানো (হ্যান্ড শেক), কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছেই। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজারের উপরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮০০ জনের বেশি। অপরদিকে, করোনায় আক্রান্ত ৬২ হাজার ২৭৬ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১১৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। এদিকে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। অপরদিকে, ইরানে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯৪ জন।
নতুন ৫টি স্ক্যানার মেশিন বসানো হয়েছে: সূত্র জানায়, নতুন আরো ৫টি থার্মাল স্ক্যানার মেশিন বিভিন্ন বন্দরে বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ভিআইপি গেটে একটি, চট্ট্রগ্রামের বিমান বন্দর ও নৌ বন্দরে একটি করে, সিলেট বিমান বন্দরে একটি এবং বেনাপোলে একটি মেশিন বসানো হয়েছে