গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৬ টি কল এসেছে। এর মধ্যে ১০৪টি কল কোভিড-১৯ সংক্রান্ত। আইইডিসিআরে সরাসরি সেবা নেয়ার জন্য এসেছেন ১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং তাদের কারও মধ্যে কোভিড-১৯ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
আজ বৃহস্পতিবার ( ৫ মার্চ) নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ নিয়ে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন। অধ্যাপক ড. সেব্রিনা ফ্লোরা আরো বলেন, কোভিড-১৯ দ্রুত ছড়িয়ে পরছে। আক্রান্ত দেশের সংখ্যা চীনসহ ৭৭টি। নতুন করে গতকাল আরও পাঁচটি দেশ যোগ হয়েছে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯৩ হাজার ৯০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় যোগ হয়েছেন দুই হাজার ২২৩ জন।
মারা গেছেন ৩ হাজার ১৯৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৮৬ জন ।
চীনে মোট রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার ৪২২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২০ জন। মারা গেছেন ২ হাজার ৯৮৪ জন। চীনের বাইরে ৭৬ টি দেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৬৮৬ জন, যার মধ্যে দু হাজার ১০৩ জন গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চীনের বর্তমান পরিস্থিতি উন্নতি দিকে জানিয়ে তিনি বলেন, তবে চীনের বাইরে প্রতিদিনি নতুন দেশ ও রোগীর সংখ্যা শনাক্ত হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত হটস্পট হিসেবে চীনের বাইরে দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান, ইতালি এবং জাপানের প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। চীনের বাইরে সর্বচ্চো রোগী পাওয়া যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়াতে। আজ সকাল পর্যন্ত সেখানে রোগী ছিল পাঁচ হাজার ৭৬৬ জন।
ইতালিতে এক বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন, তার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছেন বলে আমাদের জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। তিনি এখনও হোম কোয়ারাইন্টানে আছেন।
সিঙ্গাপুরের পাঁচ রোগীর মধ্যে তিনজন বাড়ি ফিরেছেন, একজন স্থিতিশীল অবস্থাতেই আছেন, যে কোনও দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন আর যিনি আইসিইউতে ছিলেন তিনি এখনও সেখানেই আছেন।
অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, মোংলা বন্দরে একটি জাহাজে বেশ কয়েকজন যাত্রী আছেন, তাদের তিনজনের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গে রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ইতোমধ্যেই তাদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া নেয়া হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করেই পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন
তবে সেটি এখনও বন্দরে এসে পৌঁছায়নি, বন্দর থেকে দূরে, গভীর সমুদ্রে রাখা হয়েছে, পুরো বিষয়টি ইনভেস্টিগেশন করে পুরো তথ্য জানাতে পারবো।
একইসঙ্গে নাম উল্লেখ না করে গণমাধ্যমে আসা চীনা রাষ্ট্রদূতের কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে দেখেছি, চীন থেকে আসাদেরকেই কেবল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে, কিন্তু সেটা সঠিক নয় আর এ তথ্য বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। হয়তো চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে ভুল তথ্য যেতে পারে, তিনি ভূলবশত বলতে পারেন। আমরা সেটা জানি না, তবে আমরা আমাদের দিক থেকে প্রকৃত তথ্য জানাবো।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ২১শে জানুয়ারি থেকে প্রথমে চীন থেকে আসা বিমানগুলোকে স্ক্রিনিং করা হচ্ছিল, যদিও সেখানে কেবলমাত্র চীনা নাগরিকরাই ছিলেন না, যে কেউ চীন থেকে এলেই তাদের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। পরবর্তীতে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে যখন লোকাল ট্রান্সমিশন পাওয়া গেল তখন সমস্ত পোর্ট-স্থল বন্দর, সমুদ্র বন্দর এবং সব বিমানবন্দরসহসব যানবাহনের যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সাড়ে চার লাখের বেশি যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সচেতনতারও জন্য কাজ করা হচ্ছে। কেবল দুটি আচরণগত চর্চাতেই কোভিড-১৯ এর মতো মারাত্মক রোগকে প্রতিরোধ করতে পারে। সেগুলো হচ্ছে, কাশি শিষ্টাচার এবং সাবানপানি দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়া।