করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) আতঙ্কের কারণে পাঁচ জন আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি আছেন বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। এছাড়া রাজধানীর সব বেসরকারি হাসপাতালেও আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে আসা অতিথিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হোটেলগুলোকেও নির্দেশনা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আজ করোনা ভাইরাস নিয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআর-এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এই তথ্য জানান।
এদিকে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে আসা অতিথিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হোটেলগুলোকেও নির্দেশনা দিয়েছে আইইডিসিআর। তবে স্পষ্ট করে এও বলা হয়, যারা আসছেন, তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এমন নয়; সুতরাং আমরা যেন তাদের সঙ্গে এমন কোনও আচরণ না করি, যাতে তারা হেনস্থার শিকার হন। আইইডিসিআর-এর পরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে এই রোগের জীবাণু পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয়েছে তিনটি নমুনা। তিনি বলেন, যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছেন, তবে চীন ফেরত বেশি।
অন্যান্য দেশ থেকে আসা ব্যক্তিরাও এর মধ্যে আছেন। দক্ষিণ কোরিয়া ফেরত আছেন। বিদেশি নাগরিকরাও আছেন। তবে আইসোলেশনে থাকা পাঁচ জনের সবারই শারীরিক অবস্থা ভালো বলেও জানিয়েছেন মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যখনই আমরা রোগী সন্দেহ করি বা যখনই আমাদের কাছে ফোন কল আসে, তার মধ্যে উপসর্গ আছে, আমরা বিলম্ব না করে তাকে আগে হাসপাতালে পাঠাই। নমুনা সংগ্রহ করে, পরীক্ষা করে তারপর তাদের ছাড়ি।
চীনে করোণা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট চালু করে আইইডিসিআর। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক জানান, রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে আসা অতিথিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হোটেলগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে যদি যাত্রীরা আসেন, তাহলে তারা (হোটেল কর্তৃপক্ষ) যেন আমাদের জানান। যাতে আমরা আমাদের সার্ভিলেন্স কাজ করতে পারি। আমাদের দেশে আসা কোনও যাত্রীর মধ্যে যদি কোনও জীবাণু থাকে, তার থেকে যেন তা ছড়িয়ে পড়তে না পারে। জরুরি প্রয়োজনে করোনা ভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানান ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোয় এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদি কেউ সন্দেহভাজন রোগী থাকেন, তাদের নমুনা সংগ্রহের পর যেন পরীক্ষা করা হয়। যদি ওই রোগী পজিটিভ হন, যদি তাকে অন্য হাসপাতালে যেতে হয়, তাহলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা অনেকেই বেসরকারি হাসপাতালকে পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। কোরিয়া, জাপান ও ইরানে রোগটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ায় এই তিনটি দেশ বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ বলেও উল্লেখ করেছেন আইইডিসিআর পরিচালক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়েছে ইরান থেকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী সেখানে পড়াশোনা করেন, কর্মীরা কাজ করেন। এছাড়া ব্যবসায়িক সংযোগও রয়েছে।