ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর রোববার দুপুর ২টায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হবে।
সময় চেয়ে রোববার সকালে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির এই সময় নির্ধারণ করেন। হাইকোর্টের এই বেঞ্চেই রোববার কার্যতালিকায় এক নম্বরে ছিল খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি।
জামিন পেলে খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাবেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সবার চোখ আজ উচ্চ আদালতের দিকে। বিএনপি নেতা ও আইনজীবীরা আশা করছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা বিবেচনা করে হাইকোর্ট তাকে জামিন দেবেন। অন্যদিকে পর্দার আড়ালে রাজনৈতিক সমঝোতা হয়ে থাকলে তারও একটি ‘প্রভাব’ এতে পড়তে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদনটি জমা দেওয়া হয়। গত বুধবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করলে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘এর আগে তো আমরা এই আবেদনটি খারিজ করেছিলাম। পরে আপিল বিভাগও সেটি বহাল রেখেছেন।’ জবাবে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘আমরা তো আবারও আসতে পারি। জামিন চাইতে বারবার আসতে তো বাধা নেই।’ বিচারক তখন বলেন, ‘ঠিক আছে, আমরা বিষয়টি রোববার শুনব।’
জামিন আবেদনে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসা হচ্ছে না। জামিন পেলে তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না, খেতে পারছেন না; এমনকি ওষুধও নিতে পারছেন না। তাই দ্রুত তাকে যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশে নিয়ে আধুনিক, উন্নত চিকিৎসা বা থেরাপি দেওয়া প্রয়োজন।
দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন। দল ও পরিবারের সদস্যরা তাকে অন্য হাসপাতালে নিতে চাইলেও তাতে অনুমতি মেলেনি।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিনের জন্য এর আগেও হাইকোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। গত ৩১ জুলাই সেই আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এরপর আপিল বিভাগে গিয়েও ফল পাননি। গত ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে বলা হয় আপিল বিভাগের রায়ে।