ডেস্ক রিপোর্ট : দুর্ঘটনায় তেল দূষণে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া সুন্দরবনের শ্যালা নদী পথে ফের নৌযান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। নৌযান শ্রমিকদের হুমকির মধ্যে মঙ্গলবার নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মংলা-ঘষিয়াখালি চ্যানেলের খনন কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আগামীকাল বুধবার সকাল থেকে শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারবে। তবে শুধু দিনের বেলা নৌযান চলবে। তেলবাহী জাহাজ চলাচল আপাতত বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়া কুয়াশা ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দিনের বেলায়ও শ্যালা নদীতে নৌযান চলাচল করতে পারবে না। গত ৯ ডিসেম্বর শ্যালা নদীতে একটি অয়েল ট্যাংকার ডুবে সাড়ে ৩ লাখ টন ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পড়ার পর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন দিয়ে নৌচলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক নৌচলাচল পুরোপুরি বন্ধে জাতিসংঘ ও পরিবেশবিদদের দাবির মধ্যে এ নৌপথ চালুর দাবিতে ধর্মঘটের হুমকি দিয়ে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। নৌশ্রমিকদের ওই সংবাদ সম্মেলনের পর বৈঠকে বসে মন্ত্রণালয়। এরপর মংলা বন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী ওই নৌপথে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার কথা জানানো হয়।
নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে সার পরিবহণ ও বিভিন্ন শিল্প কারখানা চালু রাখার জন্য কাঁচামাল পরিবহণ, নৌযান শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহ এবং মংলা বন্দরকে অচল অবস্থার হাত থেকে রক্ষার জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বলা হয়েছে, মংলা-ঘষিয়াখালি চ্যানেলের খনন কাজ জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। সুন্দরবন এলাকায় শ্যালা নদী দিয়ে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য কোস্ট গার্ড দায়িত্ব পালন করবে।
কোস্ট গার্ডকে সহায়তা করবে বিআইডব্লিউটিএ, বন বিভাগ, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তর। উল্লেখিত রুটে চলাচলকারী জাহাজের ফিটনেস সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কোস্ট গার্ড চেক করতে পারবে। সাগরে চলাচল করতে সক্ষম জাহাজ সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ উপযোগী নৌযান সংগ্রহ করা হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নৌপরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খান । এতে অন্যদের মধ্যে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শফিক আলম মেহেদী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব নজিবুর রহমান, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামছুদ্দোহা খন্দকার, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমোডর এম জাকিউর রহমান ভূইয়া, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ রইছউল আলম মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।