ডেস্ক: চীনে করোনা ভাইরাসে (কভিড-১৯) মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা আচমকা বৃদ্ধি পাওয়ার পরদিনই তা ফের আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। বৃহস্পতিবার হুবেই প্রদেশে ভাইরাসটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১১৬ জন। আক্রান্ত হয়েছেন নতুন ৪ হাজার ৮২৩ জন। এছাড়া, জাপানে একজন মারা গেছেন। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে জাপানে এটাই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। সব মিলিয়ে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মারা গেছেন ১৪৭৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬৫ হাজার। বিগত কয়েক সপ্তাহে ধরে প্রায় কাছাকাছি হারে বৃদ্ধির পর বুধবার চীনে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় বড় ধরনের বৃদ্ধি দেখা যায়।
সেদিন এতে প্রাণ হারান ২৪২ জন ও আক্রান্ত হন প্রায় ১৫০০। এতে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটির সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, চীনে প্রাদুর্ভাব বাড়লেও বিশ্বজুড়ে প্রায় অপরিবর্তিতই রয়েছে কভিড-১৯’এর সংক্রমণ। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
ডব্লিউএইচও বলেছে, চীন ছাড়া বিশ্বের বাকি অংশে করোনার সংক্রমণে তেমন কোনো বড় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জাপানের আটকা পড়া প্রমোদতরীটি। সেখানে বৃহস্পতিবার নতুন করে ৪৪ জনের মধ্যে ভাইরাসটি ধরা পড়েছে। এতে প্রমোদতরীটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২১৮ জনে পৌঁছেছে। এখন পর্যন্ত চীন ছাড়া ভাইরাসটি আরো দুই ডজন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের বাইরে এতে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৪৪৭ জন। সবচেয়ে বেশি প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে সিঙ্গাপুরে।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, বুধবারের বৃদ্ধি কেবল চীনেই দেখা গেছে। সংস্থাটির জরুরি অবস্থা বিষয়ক কর্মসূচির প্রধান মাইক রায়ান জানান, হুবেই প্রদেশের কর্মকর্তারা ভাইরাসে আক্রান্তদের সনাক্তকরণের পদ্ধতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনায় এমনটা হয়েছে। পূর্বে কাউকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হতো কেবল, ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর। বুধবার থেকে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে ও সিটি স্ক্যানে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা গেছে কিন্তু ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যায়নি, এমন ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত করা হচ্ছে। রায়ান বলেন, এই বৃদ্ধি সংক্রমণের ধারায় কোনো বড় পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে না। গণনার ধরনের পরিবর্তনের জন্যই এমনটা হয়েছে। এসব ঘটনার অনেকগুলোই কয়েকদিন, সপ্তাহের আগের। হয়তো আগেই রিপোর্ট করা হয়েছিল, কিন্তু তখন ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় কভিড-১৯’এর সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত তারা। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোনো আক্রান্তের কথা প্রকাশ করেনি। উত্তর কোরিয়া চাইলে সেখানে নিজস্ব ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা পাঠাতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র।
বৃটেনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে নয় জন হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ চীনের মূল ভুখণ্ড থেকে সফরকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ২২শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। হংকংয়ের রাগবি সেভেনস, সিঙ্গাপুর সেভেনস সহ স্থগিত করা হয়েছে একাধিক স্পোর্টস ইভেন্ট। চীন জানিয়েছে, বেশকিছু প্রদেশে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ রাখা হবে শিশুদের স্কুল। এই স্থগিতাবস্থা আরো বাড়ানো হতে পারে। ভিয়েতনামে রাজধানী হানোইয়ের পাশে আক্রান্ত সন্দেহে আলাদা করে রাখা হয়েছে হাজারো মানুষকে। নিশ্চিত আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৬ জনকে।