ঢাকা: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসঙ্ঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) রায় বাস্তবায়নে মিয়ানমার সরকার উদ্যোগ নেবে আশা প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই মিয়ানমার তাদের ফেরত নেবে বলে সরকার আশা করছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের লিখিত জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের পাশাপাশি অন্যান্য দেশ ও ফোরামে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পঞ্চম যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে মিয়ানমারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যা বিদ্যমান সমস্যা সামাধনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, যেকোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াই জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি। রাখাইন রাজ্যে যথাযথ সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলকে সাথে নিয়ে মিয়ানমারকে রাজী করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ শিগগিরই রাখাইন রাজ্যে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে এবং দ্রুত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
একই প্রশ্নের জবাবে এ কে আবদুল মোমেন জানান, ওআইসির পক্ষ থেকে গাম্বিয়া জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় জাতিসঙ্ঘের ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এই মামলার শুনানি শেষে গত ২৩ জানুয়ারি রায় প্রদান করা হয়েছে। আইসিজেতে শুনানিকালে মিয়ানমারের সর্বোচ্চ নেতা অং সান সু চি তার দেশের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করলেও জাতিসঙ্ঘের এই সর্বোচ্চ আদালত রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা প্রতিরোধে মিয়ানমারকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
মন্ত্রী জানান, আইসিজের দেয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে। একই সাথে সেখানে রাখাইন নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ফলে বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে আস্থা জোগাবে।
বিএনপি দলীয় সদস্য মো: হারুনুর রশীদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩ থেকে ৬ অক্টোবর ভারত সফর করেন। গত ৫ অক্টোবর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া, সংস্কৃতি, নৌপরিবহন, অর্থনীতি, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি সংক্রান্ত সাতটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।