ডেস্ক: থাইল্যান্ডে হত্যালীলা চালানো সেনা সদস্য জাকরাফান্থ থোম্মা’কে গুলি করে হত্যা করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। শনিবার ওই সেনা সদস্য এলোপাতাড়ি গুলি করে হত্যা করেছে কমপক্ষে ২০ জন মানুষকে। এর মধ্যে রয়েছেন তার কমান্ডিং অফিসার। হত্যাকাণ্ড চালানোর আগে সে সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্প থেকে অস্ত্র চুরি করে। তা নিয়ে নাখোন রাটচাসিমা শহরে একটি শপিং মলে রক্তগঙ্গা বইয়ে দেয়। এ সময় সেখানে এক ভয়াবহ দৃশ্যের অবতারণা হয়। ওই শপিংমলে উপস্থিত মানুষের মধ্যে ভয়াবহ এক আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা গুলির শব্দে দিশেহারা হয়ে ছুটতে থাকেন।
ওই সময়ের যে ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হয়েছে তাতে এমনই দৃশ্য ফুটে উঠেছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে, হামলাকারী রাস্তায় এবং নাখোন রাটচাসিমা শহরের ওই শপিং মলে একটানা গুলি করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে ওই শপিং মলের ভিতরে অবস্থান নেয়। খবরে বলা হয়, সেখানে সে কিছু মানুষকে জিম্মি করেছিল। কিন্তু শনিবার দিবাগত সারারাতে ওই ভবনের ভিতরে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা।
পরে তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। কি কারণে সে এই হামলা চালিয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কোংচিপ তান্ত্রাওয়ানিট বলেছেন, সে কি কারণে এই হামলা চালিয়েছে আমরা তা জানতে পারি নি। দৃশ্যত মনে হচ্ছে, সে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল। ওদিকে থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের এমন একশনের অভিনন্দন জানিয়ে রোববার সকালে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল। তিনি লিখেছেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এ অবস্থার ইতি ঘটানোর জন্য ধন্যবাদ। হামলাকারী গুলিতে নিহত হয়েছে! ওদিকে কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম দিকে নিহতের সংখ্যা ২১ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে মারা গেছেন ২০ জন। আহত হয়েছেন ৪২ জন। এর মধ্যে এখনও হাসপাতালে আছেন ২১ জন। বাকি ২১ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় হত্যাকান্ড শুরু করে জাকরাফান্থ থোম্মা। এ সময় নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা ওই শপিংমলটি ঘিরে ফেলে। তারা অস্ত্রধারীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছিল। একই সঙ্গে তারা শপিংমলে আটকে পড়া মানুষদের নিরাপদে বের করে আনার চেষ্টা করে। তবে উদ্বেগ দেখা দেয়। মনে করা হয়, অস্ত্রধারী জাকরাফান্থ থোম্মা আরও অনেক মানুষকে জিম্মি করেছে। রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় পুলিশ নিশ্চিত করে যে, জাকরাফান্থ থোম্মাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে কিভাবে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায় নি। এর আগের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, অস্ত্রধারীর বয়স ৩২ বছর। সে ওই ভবনের পিছন দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল। শপিংমলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তার মাকে, যাতে সে আত্মসমর্পণ করে।
এ ঘটনা থেকে পালিয়ে বাঁচা এক ব্যক্তি বলেছেন, তিনি চতুর্থ তলার একটি বাথরুমে পালিয়ে ছিলেন। এরপর সেখান থেকে দ্বিতীয় তলায় গিয়ে একটি রেস্তোরাঁর টেবিলের নিচে তিন ঘন্টা আত্মগোপন করে ছিলেন। এ সময় তিনি কমপক্ষে চারটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। তারপরই তাকে নিরাপদে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা।