চীন থেকে আর কোনো বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। তবে কেউ অসুস্থ হলে সে দেশেই চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আত্মীয়স্বজন ও দেশের স্বার্থে উহানসহ চীনের করোনা ভাইরাস আক্রান্ত এলাকায় থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে ১৭০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। চীনে যারা আছেন তারা কোয়ারেন্টাইনে আছে। সেখানে অসুস্থ হলে চিকিৎসা ভাল হবে। তাই সেখানে থাকাটা অনেক বেটার হবে।
আমি মনে করি এই অবস্থায় বাংলাদেশি নাগরিকদের সেখানে থাকা ভালো। এছাড়া চীন থেকে ফেরত আনা ৩১২ জন বাংলাদেশি নাগরিকদের আশকোনা হজ ক্যাম্প থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছেড়ে দেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এখনও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে শনাক্ত করা হয়নি। হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স প্রস্তুত। করোনা ভাইরাস দেখা দিলে তা ছড়িয়ে যাওয়া রোধে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দেশের স্বাস্থ্যখাত পূর্ণ সজাগ। ইতিমধ্যে দেশের সব নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরে প্রয়োজনীয় স্ক্যানিং মেশিন বসানো হয়েছে। চীনা নাগরিকদের সম্পর্কে তিনি বলেন, চীনা নাগরিকদের বাংলাদেশে আসতে হলে ভিসা নেয়ার পাশাপাশি মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। এ ছাড়া অনঅ্যারাইভ্যাল ভিসা বন্ধ করা হয়েছে সাময়িক সময়ের জন্য। এ সময় মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, সুস্থ ব্যক্তির এ মুহূর্তে মাস্ক পরার কোনো প্রয়োজন নেই। যাদের সর্দি-কাশি-জ্বর আছে শুধু তারাই মাস্ক ব্যবহার করবে। যাতে তাদের কাছ থেকে কোন ছোঁয়াচে রোগ অন্যদের সংক্রমিত করতে না পারে। দেশে বর্তমান মাস্ক সঙ্কট আছে কি-না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, শিগগিরই জাপান সরকার বাংলাদেশকে ৭০ লাখ মাস্ক বিনামূল্যে প্রদান করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। এগুলো দেশে এলে বাজারে মাস্কের সঙ্কট কমে যাবে। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিপ্তরের মহাপরিচালক কাজী আ খ ম মহিউল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১শে ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত অর্থাৎ ছোঁয়াচে হওয়া এ ভাইরাস ঠেকাতে চীন ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বিভিন্ন দেশ। এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ জনে আর আক্রান্ত ২৮ হাজারের উপরে।