ইশরাকের ১৩ দফার ইশতেহারে ১৪৪ প্রতিশ্রুতি

Slider জাতীয় রাজনীতি


ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন ১৩ দফার ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। আজ বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঘোষিত ইশতেহারে ১৪৪ প্রতিশ্রুতি উপস্থাপন করেন। দুর্নীতিমুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক সেবা, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার রক্ষা এবং ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সম্মিলনে মাদকমুক্ত, যানজট দূষণমুক্ত, মশা ও জলাবদ্ধতা মুক্ত, ভারসাম্যমূলক ও পরিবেশ সম্মত বিশ্বমানের বসবাসযোগ্য আধুনিক নগরী গডার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। নাগরিক সেবা, নাগরিক বিনোদন, যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়ন, নাগরিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ব্যবস্থা, পরিবেশ উন্নয়ন, বনায়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, সমাজসেবা কার্যক্রম, জননিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নৈতিকতার শক্তি পুনরুদ্ধার, গ্রন্থাগার ও জাদুঘর, নগর পরিকল্পনা ও প্রশাসন-এই দফা ইশতেহার উপস্থাপন করেন তিনি।

ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, আধুনিকতার সম্মেলনের সবার জন্য বাসযোগ্য একটি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক মহানগরী গড়ে তোলা হবে। গণশুনানির মাধ্যমে নগরবাসীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের মতামতের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হবে। হোল্ডিং ট্যাক্স সেক্টরকে সকল প্রকার দুর্নীতিমুক্ত করা হবে। সব ধরনেসেবা তাৎক্ষণিক প্রদানের লক্ষ্যে দ্রুত জবাবদিহিতামূলক অন স্টপ সার্ভিস চালু করা হবে।

ঢাকা ওয়াসাসহ রাজধানীতে সেবাপ্রদানকারী সব প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে সুপেয় পানীয় জলের সরবরাহ জলাবদ্ধতা দূরীকরণ পয়নিষ্কাশন আধুনিকায়ন নিয়মিত পরিষ্কার ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। মূল সড়ক, অলিগলি, শাখা সড়ক, সড়কদ্বীপ, খেলার মাঠ, পার্ক, নদী-খাল-বিল মহানগরের সর্বোচ্চ সার্বক্ষণিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নগরবাসীকে সস্তা দামে বিষমুক্ত ও ভেজালমুক্ত খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে বিশেষ বিশেষ স্থানে এসব মার্কেটও স্থাপন করা হবে। নাগরিকদের নিকট থেকে আদায় করা করের টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তা বছরে কমপক্ষে দু’বার করদাতাদের সামনে উপস্থাপন করে আয়-ব্যয়ের হিসাব রক্ষণের স্বচ্ছতা প্রণয়ন করা হবে। এই মেয়র প্রার্থী বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে আমার সঙ্গে সাক্ষাত প্রার্থীদের সাক্ষাতের সুযোগ সার্বক্ষণিকভাবে উন্মুক্ত রাখা হবে। তিনি বলেন, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্যানিটারি ল্যান্ডফিল গড়ে তোলা হবে। পরিচ্ছন্ন ঢাকা করতে রাত ১২ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সব ধরনের অপারেশন নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশ্বের উন্নত শহরের মত ডোর টু ডোর ওয়েস্ট কালেকশন পদ্ধতিতে বর্জ্য সংগ্রহ, অপসারণ করা হবে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কম্পোজিট সার তৈরি ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হবে। রাজধানীর বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ করে রাত্রিকালে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সদর লঞ্চ টার্মিনাল সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এবং কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে করপোরেশনের উদ্যোগে এবং বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত ও নিরাপদ সিটি পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা হবে। বারবার রাস্তা খোড়াখুড়ি এবং রোড ডিভাইডার ভাঙ্গার ফলে বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে জনদুর্ভোগ ও সম্পদের ক্ষতি হয়, সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে ও নাগরিক সাধারণের দ্রুত যাতায়াতের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালযয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনে উন্নয়ন সহযোগীদের পরামর্শ ও সহায়তা গ্রহণ করা হবে। দ্রুতগামী ইলেক্ট্রিক্যাল বাস সার্ভিস ও স্মার্ট বাস স্টেশন নির্মাণ করা হবে। জনবহুল রাজধানীর ভবিষ্যৎ জনঘনত্বের কথা বিবেচনা করে ভবিষ্যতে যথাসময়ে পাতালরেল নির্মাণের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। প্রথম পর্বে পিলখানা থেকে শুরু হয়, লালবাগকেল্লা চকবাজার সদরঘাট গুলিস্তান হয়ে মতিঝিল শেষ হবে। ঢাকা দক্ষিণের যাত্রীরা এর মাধ্যমে চলমান মেট্রোরেল প্রকল্পের মতিঝিলে স্টেশনে উত্তর ঢাকায় যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। আরেকটি সংযোগ শ্যামপুর থেকে যাত্রাবাড়ী হয়ে মতিঝিলে অনুরূপভাবে যুক্ত হবে। ঢাকা বাসের জনসংখ্যা প্রবৃদ্ধিকে বিবেচনায় নিয়ে রাজধানীর সকল ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ৫০ বছরের একটি দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করে পর্যায়ক্রমে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আবদুর রব, ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা জামাল হায়দার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েস্বর চন্দ্র রায়, ড. রেজা কিবরিয়া, ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, ইসলাম খান, অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী, সুব্রত চৌধুরী, ইকবাল হাসান টুকু, সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ড. মাহবুল্লাহ, আবদুস সালাম, হাবীব উন নবী খান সোহেল, আফরোজা আব্বাস, সালাউদ্দিন আহমেদ, কাজী আবুল বাসার আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর জেনারেল রুহুল আলম চৌধুরী, হাবীবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, বিলকিস জাহান শিরিন, শেমা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, এবিএম মোশারফ হোসেন,জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ছাত্রদলের সভাপতি খায়রুল কবির খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল সহ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *