হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ দেশের সীমান্তবর্তী উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে দেশের জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেটের প্রতি তরুন যুবকদের আগ্রহের কমতি নেই। আর এ খেলা আজকাল গ্রামে-গঞ্জে সবখানে শিশু -কিশোরদের খেলতে দেখা গেলেও খেলার মাঠ ও খেলার সকল উপকরন ও প্রশিক্ষন না থাকায় গ্রামের অনেক সম্ভবনাময় খেলোয়ার থাকা সত্তেও প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও খেলার সুযোগ না পেয়ে ঝড়ে পড়ছে।
গ্রাম-গঞ্জের এমন চিত্র পরিলক্ষিত ও উপলব্ধি করে ৫ জানুয়ারী ২০১৬ সালে ক্রিকেটপ্রেমী চার তরুণ এস. এম ওমর ফারুক উজ্জল, মোঃ শামসুল ইসলাম শাওন, মোঃ সুমন হোসেন, তাসফির- ই খুদা পদক হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমীর।
এর মাধ্যমে শুরু হয় উত্তরের অবহেলিত জনপথ হতে বিশ্বমানের ক্রিকেটার তৈরীর এক ক্ষুদ্র প্রচেষ্ঠা। বিগত ৪ বছরে দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমির প্রশিক্ষনার্থীরা বিভিন্ন বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতামূলক পর্যায়ে সাফল্য অর্জন করেছে।
বর্তমানে এ একাডেমিতে ৩০ জন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহন করছেন। এরমধ্যে আবাসিক প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা রয়েছে ছয় জন।
এই একাডেমি হতে বর্তমানে জেলা দলে ৬ জন, বিকেএসপিতে পুর্নকালীন ছাত্র ১জন,বিকেএসপিতে ট্রায়ালে ৪ জন, ১ম শ্রেনীর ক্রিকেটার ১ জন,২য় শ্রেনীতে ৩জন সহ প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেটে খেলছে ১০ জন প্রশিক্ষণাার্থী ক্রিকেটার।
বিগত চার বছরে দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমিটি সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে। বর্তমানে এ একাডেমির পরিচালক ও প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এস এম ওমর ফারুক উজ্জল। তিনি বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতা পেলে এ একাডেমি হতে তারকা ক্রিকেটার খেলোয়ার তৈরী করা সম্ভব বলে মনে করি। দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমির আরেক উদ্যেগতা মোঃ সামসুল ইসলাম (সাওন) জানান, খেলাধুলার পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, একটা সরঞ্জাম রাখার ঘর, একটা ওয়াস রুম এবং প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য আদর্শ জায়গা পাওয়া গেলে আমরা আরো বেশি সম্ভাবনা তৈরি করতে পারবো। তারা বলেন, একাডেমির সভাপতি, সম্পাদক সহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ এলাকাবাসির সহায়তায় আমরা এগিয়ে চলেছি। আমাদের কিছু ব্যর্থতাও রয়েছে যা আমরা গুরুত্ব সহকারে কাটিয়ে উঠার চেষ্ঠা করছি।
কালীগঞ্জ উপজেলায় একটি মাত্র খেলার মাঠ হবার কারণে আমাদের ক্রিকেটাররা মাঠে ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না কারন সারা বছর এই মাঠটি ফুটবলাররা দখলে রাখেন তাই আমাদের প্রশিক্ষণার্থীরা বিভিন্ন প্রীতি ম্যাচ গুলোতে সে ভাবে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয় না।তাই আমাদের সপ্তাহে দুই-তিন দিন ম্যাচ খেলার সুযোগ দিলে আমরা আগামীতে অনেক অনেক বেশি সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবো।
দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমির প্রশিক্ষনার্থী মোঃ সাহেদ কবীর জানায়, দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমি এ জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি। এ একাডেমি হতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি বিকেএসপিতে ক্যাম্প করেছি।
দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমি সম্পর্কে রংপুর বিভাগের পরপর দুবারের শ্রেষ্ঠ কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুজ্জামান আহমেদ বলেন, উপজেলা পর্যায়ে দূরন্ত ক্রিকেট একাডেমি একটি মাইলফলক। এ একাডেমি হতে আগামীতে সাকিব, মাশরাফি , মোস্তাফিজদের মত ক্রিকেট তারকা তৈরী হবে বলে আমি দৃঢ বিশ্বাস রাখি। এ একাডেমিকে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে একাডেমির সভাপতি গোলাম মারুফ হাসান (তমাল) জানান, আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে। সকল প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করে একাডেমির কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। সকলের সার্বিক সহযোগিতা পেলে এ একাডেমি হতে তারকা নির্ভর ক্রিকেটার তৈরী করতে সক্ষম হব।