ডেস্ক: ইরানের প্রয়াত শীর্ষ জেনারেল কাসেম সুলাইমানির উত্তরসূরিকে হত্যার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের ইরান বিষয়ক এক উপদেষ্টা বলেছে, আমেরিকানদের হত্যার রীতি চালু রাখলে সুলাইমানির মতো একই পরিণতি হবে তার উত্তরসূরিরও। তাদের এ মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে রাশিয়া। বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য। বৃহস্পতিবার দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ফাঁকে এই হুঁশিয়ারি ও সমালোচনার ঘটনা ঘটেছে। এ খবর দিয়েছে দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট।
খবরে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে ইরাকে এক ড্রোন হামলায় সুলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন সেনারা। তাকে হত্যার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। সুলাইমানি ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধরদের একজন।
দেশটির ইসলামিক রেভুলিউশনারি গার্ডস কর্পসের বিশেষ বাহিনী কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান তারই সহযোগী ইসমাইল ঘানি। এর আগে বাহিনীটির ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন।
লন্ডন-ভিত্তিক আশার্ক আল আসওয়াত পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ঘানিকে সুলাইমানির পথ অনুসরণ না করতে হুঁশিয়ারি দেন ইরানে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত ব্রায়ান হুক। তিনি বলেন, ঘানি যদি আমেরিকানদের হত্যার পথ বেছে নেয় তাহলে তিনিও একই পরিণতির শিকার হবেন। বহু বছর ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয় স্পষ্ট করে রেখেছেন যে, আমেরিকান বা আমেরিকান স্বার্থের ওপর হামলার নিষ্পত্তিকারী জবাব দেয়া হবে।
হুক বলেন, ড্রোন হামলায় সুলাইমানির মৃত্যু হচ্ছে, আমেরিকানদের ওপর হামলার জবাব দিতে ট্রাম্পের কোনো দ্বিধা না থাকার প্রমাণ। আমরা মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে যেকোনো হামলার জন্য ইরান সরকার ও তাদের এজেন্টদের দায়ী করবো।
মার্কিন দূতের হুঁশিয়ারির তীব্র সমালোচনা করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, আমি আরো একবার বলছি যে, এ ধরনের বিবৃতি আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। রুশ গণমাধ্যম স্পুটনিক জাখারোভাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য অধিকার ও আইনের লঙ্ঘন। বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিদের এমন মন্তব্য করার অধিকার নেই।
এদিকে হুকের হুঁশিয়ারিকে ‘সরকারি সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মৌসাভি বলেন, এসব শব্দ আমেরিকার সরকারি ও টার্গেটেড সন্ত্রাসবাদ প্রকাশের স্পষ্ট ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। তিনি বলেন, ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের (ইসরাইল) পর এখন, যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় সরকার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য সরকারি সম্পদের ব্যবহার করছে ও ভবিষ্যতেও করবে। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশটির দুর্বলতা, মরিয়া ভাব ও বিভ্রান্তির প্রকাশ। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করতে আন্তর্জাতিক মহলকে আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, নয়তো ভবিষ্যতে সবাইকে এসবের শিকার হতে হবে।
কুদস ফোর্সের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার দিন কয়েক পর যুক্তরাষ্ট্রের মারমুখো সমালোচনা করেন। মধ্যপ্রাচ্যকে আমেরিকামুক্ত করার প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি।