ঢাকা:কক্সবাজার, মাগুরা ও নাটোরে বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে তিনজন নিহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ, মাগুরা সদর উপজেলা এবং নাটোরের গুরুদাসপুরে এসব পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজারের টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলা হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার নাফ নদের তীরে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
বিজিবির গুলিতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে বিজিবির দাবি।
টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফয়সাল হাসান খানের ভাষ্যমতে, জাদিমুরা নাফ নদের তীরে বিজিবির একটি দল টহল দিচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তিকে কাঁধে বস্তা বহন করতে দেখে তাদেরকে থামার সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু তারা সংকেত অমান্য করে দ্রুত এগিয়ে গেলে বিজিবি সদস্যরা তাদের পিছু নেয়। এ সময় তারা বিজিবির ওপর গুলি চালালে দুই বিজিবি সদস্য আহত হযন। বিজিবিও পাল্টা গুলি চালালে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিজিবি অধিনায়ক বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে অনেকে তাকে রোহিঙ্গা নাগরিক বলে ধারণা করছেন।
এদিকে, মাগুরা সদর উপজেলার বরই গ্রামের স্লুইসগেট এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মিন্টু গাজী (৩৭) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মিন্টু গাজী নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের ফায়েক গাজীর ছেলে। পুলিশের দাবি, তিনি ডাকাত সর্দার ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটারগান, দুটি গুলির কার্তুজ ও দুটি দা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামের ভাষ্যমতে, গতরাত ১টার দিকে বরই গ্রামে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় সদর পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিন্টু গাজীকে উদ্ধার করা হয়। তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি শুটারগান, দুটি গুলির কার্তুজ ও দুটি দা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ওসির দাবি, মিন্টু গাজী আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। প্রতিপক্ষ ডাকাতদলের সঙ্গে গুলিবিনিময়ে তিনি নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অপরদিকে, নাটোরের গুরুদাসপুরের পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন আবু হানিফ ব্যাপারী নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতরাতে উপজেলার কালাকান্দর সংযোগ সড়কের পাশে অবস্থিত কলাবাগানে এ ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি, নিহত হানিফ ব্যাপারী গুরুদাসপুরের চাঞ্চল্যকর মনোয়ারা বেগম হত্যা মামলার ভাড়াটে খুনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ১৬ জানুয়ারি ভোরে গুরুদাসপুর এলাকার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগমকে (৬২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের হলে তদন্তে নামে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় এই মামলার আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, সিংড়া সার্কেল এএসপি মো. জামিল আকতারের নেতৃত্বে গুরুদাসপুর থানা পুলিশের একটি দল গত ২৩ জানুয়ারি রাতে রাজধানী ঢাকার মেরুল বাড্ডা এলাকা থেকে মনোয়ারা বেগম হত্যা মামলার আসামি আবু হানিফ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর বনশ্রী এবং সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার কল্যাণপুর নামক স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার হানিফের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গতরাতে পার গুরুদাশপুরে সংঘটিত মনোয়ার বেগম হত্যা মামলার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হয়। এ সময় পার গুরুদাসপুর থেকে কালাকান্দর সংযোগ সড়কের পাশের কলাবাগানে অবস্থানরত হত্যা মামলার পলাতক আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়।
এ সময় দুপক্ষের বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে আবু হানিফ ব্যাপারী পলানোর চেষ্টা করলে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে একটি পিস্তল ও একটি দেশি পাইপগান এবং পাঁচ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে।