ঢাকা: বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) তিন সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সকল সাংবাদিক সংগঠন নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। বাংলা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্টার শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আলোকিত বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার সাজ্জাদ মাহমুদ খানকে পুলিশের এক সদস্য কর্তৃক মোটরসাইকেল চাপা ও মেরে ফেলার হুমকি এবং ক্র্যাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবাদুজ্জামান শিমুলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ হুঁশিয়ারি দেন।
আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) উদ্যোগে ক্র্যাব কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিকু। মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন ক্র্যাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দীপু সারোয়ার, কামরুজ্জামান খান, ক্র্যাবের সাবেক সভাপতি আবু সালেহ আকন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদসহ প্রমুখ। এ সময় ক্র্যাবের সাবেক সহ-সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল, ক্রাইম রিপোর্টার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি নেসারুল হক খোকন, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ক্র্যাবের সাবেক অর্থ সম্পাদক দুলাল হোসেন, ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক সাখাওয়াত কাওসার, অর্থ সম্পাদক আবু হেনা রাসেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হরলাল রায় সাগর, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সাইফ বাবলু, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহীন আলম, কার্যনির্বাহী সদস্য রুদ্র মিজানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, দেশের পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, সাংবাদিকরা মানুষের কাছে মারধরের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। কখনও পুলিশ, কখনও সন্ত্রাসী, কখনওবা মাফিয়া এবং রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সাংবাদিকদের পেটাচ্ছে।
ক্র্যাবের তিন সদস্যসহ গত এক সপ্তাহে অন্তত ৭ জন সাংবাদিক অন্যায়মূলক হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক নির্যাতন করলে শাস্তি হয় না বলেই দিন দিন সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দুর্নীতিবাজদের একমাত্র প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে সাংবাদিকরা। এর প্রতিকার হওয়া উচিত। বক্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশে মুজিব বর্ষ চলছে। পুলিশের এ বছরের স্লোগান হচ্ছেÑ ‘মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার।’ কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম যে, বিভিন্ন স্থানে হয়রানি করা হচ্ছে। খোদ রাজধানীতে শেখ জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ মাহমুদকে মারধরে পুলিশ সরাসরি জড়িত। পুলিশের অনেকের গাড়ির কাগজপত্র নেই। যদি পুলিশ উল্টোপথে চলে, তবে এই পুলিশ কিভাবে জনবান্ধব হবে এমন প্রশ্নও তোলেন বক্তারা। এছাড়া খিলগাঁওয়ে শিমুলের ওপর অজ্ঞাত সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদেরকও চিহ্নিত না করায় বক্তরা হতাশা ব্যক্ত করেন।
বক্তরা বলেন, উল্টোপথে এসে সাংবাদিকদের চাপা দেওয়ায় জড়িত পুলিশ সদস্যের মোটরসাইকেলটির নম্বর প্লেটও ছিল ভুয়াÑ যা আরও বড় ধরণের অপরাধ। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ক্র্যাব নেতৃবৃন্দ কথা বলেছেন। তিনি ঘটনাটি অনুন্ধান করে ব্যবস্থা নিতে একজনকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
বক্তারা ক্র্যাবের তিন সদস্যের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সকল সাংবাদিক সংগঠনকে নিয়ে ক্র্যাব বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়।