“চোখের জলের হয় না কোন দাম “–ডাঃ আমীর হোসাইন রাহাত

Slider বাধ ভাঙ্গা মত

ঢাকা: মানুষের আনন্দ আমাকে যতটা স্পর্শ করে তার চেয়ে অনেক বেশি স্পর্শ করে বেদনা। সেজন্যই আজীবন নিজেকে একজন দুঃখী মানুষ মনে হয়েছে আমার।

নিজের সম্পর্কে আমার মূল্যায়ন আমি একজন অতি আবেগপ্রবণ মানুষ। আবেগে কেঁদে ফেলা আমার আশৈশব মানসিক দূর্বলতা। বিশেষ করে আমার সামনে কেউ কান্না করলে আমি নিজের চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনা।

বহুবার বহুভাবে চেষ্টা করেছি আমার আবেগী এই যন্ত্রণা বন্ধ করতে, কিন্তু পারিনি। কতবার মনে মনে সুদৃঢ় শপথ নিয়েছি আবেগের এই দৃষ্টিকটু বহিঃপ্রকাশ রুখবো বলে। না, পারিনি।

সেই শৈশব থেকে কারনে অকারণে কান্নার সুদীর্ঘ ইতিহাস আমার। দুঃখে কেঁদেছি, আনন্দে কেঁদেছি, আবেগে কেঁদেছি, অভিমানে কেঁদেছি – কতো যে কেঁদেছি এ জীবনে তার হিসাব নেই।

তাই সিনেমা বা নাটকের দৃশ্য দেখে আমি কাঁদি, গান শুনে আমি কাঁদি। কখনও চোখের জল ফেলে কাঁদি, কখনও সশব্দে কাঁদি। কিন্তু সবচেয়ে বেশি কাঁদি নিঃশব্দে নীরবে।

গতকিছুদিন ধরেই চলছিল আমার নীরব কান্না। মনকে শক্ত করার প্রাণপণ চেষ্টা করছিলাম, চেষ্টা করছিলাম কান্না লুকিয়ে রাখার। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আমার বিদায় মুহুর্তটি খুব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেও পারলাম না শেষ পর্যন্ত।

কয়েকজন সহকর্মীর চোখের জল, কয়েকজনের অঝোর কান্না আমার সব প্রতিরোধ চেষ্টা ব্যার্থ করে দিলো।
আমিও ভিজলাম দু’চোখের বৃষ্টিতে। তার চেয়ে অনেক বেশি কাঁদলাম নীরবে।

প্রিয় সহকর্মী আপনাদের এ কান্নার মূল্য দেবার সাধ্য আমার নেই। আপনাদের এ কান্না যে ভালোবাসার চিহ্ন এঁকেদিলো আমার হৃদয়ে আমি তা কিছুতেই মুছে যেতে দিবোনা আমার হৃদয় থেকে।

কান্নার কোন মূল্য আমার জানা নেই। কিন্তু আমি জানি ভালোবাসার মূল্য শুধুই ভালোবাসা।
আমি এই মূল্য পরিশোধে অঙ্গীকারবদ্ধ! আপনাদের জন্য ভালোবাসা।

১৪ জানুয়ারী ২০২০.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *