ডেস্ক:ইরানে দুর্ঘটনাবশত ইউক্রেনীয় যাত্রীবাহী বিমান গুলি করে ভূপাতিতের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার দেশটির বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে। তবে ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসাইন ইসমাইল জানিয়েছেন, বিমান ধসের ঘটনায় এখনো তদন্ত চলছে। তবে এর বেশি বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রূহানি বলেছেন, একটি বিশেষ আদালত এই তদন্তের দেখভাল করবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার তেহরান থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই বিধ্বস্ত হয় ইউক্রেনিয়ান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। এতে বিমানটির ১৭৬ আরোহীর সকলে নিহত হন। নিহতদের বেশির ভাগই ছিলেন ইরানি ও কানাডিয়ান নাগরিক।
দুর্ঘটনাটির পর অভিযোগ ওঠে ইরানি হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে বিমানটি। প্রথম তিনদিন এ অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে তা স্বীকার করে নেয় ইরান। তারা জানায়, কারিগরি ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে। ইরানের রেভ্যুলুশনারি গার্ড জানায়, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভুলবশত বিমানটিকে একটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে সেটির ওপর হামলা চালায়। সে সময় ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ড নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল। দুর্ঘটনার দিন ইরাকে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ইরানি বাহিনী।
এদিকে, বিমানে হামলা চালানোর ব্যাপারে ইরানের স্বীকারোক্তি দেশটিতে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দেখা দিয়েছে বিক্ষোভ। ধর্মীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানী তেহরান সহ একাধিক শহরে। সোমবার ইরানের বিচার ব্যবস্থার মুখপাত্র এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত করবে বিচার বিভাগ। ইসমাইল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বীয় স্বার্থে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা এ ঘটনায় কতটা প্রভাব ফেলেছে তা খতিয়ে দেখবো আমরা। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে আমরা তদন্ত জারি রাখবো।
এদিকে, টিভিতে প্রচারিত এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, বিচার বিভাগ এই তদন্তের দেখভালের জন্য একজন উচ্চপদস্থ বিচারক ও বহু বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি বিশেষ আদালত গঠন করবে। এটা কোনো সাধারণ ও নিয়মিত ঘটনা হিসেবে দেখা হবে না। পুরো বিশ্ব এই আদালতের ওপর নজর রাখবে।
ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, বুধবারের শোকাবহ দুর্ঘটনাটির দায় কোনো একজন ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেয়া উচিত হবে না। তিনি বলেন, কেবল যে ব্যক্তি ট্রিগার টিপেছে তিনিই এ ঘটনার জন্য দায়ী নয়। তার সঙ্গে আরো অনেকে দায়ী। তিনি যোগ করেন, ইরানি সশস্ত্র বাহিনী নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে। এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। আমাদের জনগণকে নিশ্চিত করতে হবে যে, এমনটি আর কখনো হবে না।