মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে পারে, সেই সঙ্গে সীমিত আকারে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সম্ভাবনাও রয়েছে। আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণের কাজ সম্পন্ন করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায় এবং গণভবন সূত্র জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভায় রদবদলের ক্ষেত্রে টানা তৃতীয় মেয়াদের এ সরকারের গত এক বছরের কাজের মূল্যায়ন করা হবে। আর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন এবং পরবর্তী সাংগঠনিক অবস্থা বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার মতো যোগ্য বলে দলটির উচ্চ পর্যায়ে বিবেচিত হওয়ার পরও সেখানে স্থান মেলেনি—এমন দু-একজন নেতার ঠাঁই হতে পারে মন্ত্রিসভায়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করার পর মন্ত্রিসভায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মন্ত্রিসভা পুনর্বিন্যাস একটি রুটিন ওয়ার্ক; এই নতুন বছরে এটা হতে পারে।’
গণভবন-সংশ্লিষ্ট সূত্র কালের কণ্ঠকে জানায়, বর্তমান মন্ত্রিসভার কাজের মূল্যায়নে একাধিক মন্ত্রণালয়ের দুর্বলতার চিত্র ফুটে উঠেছে। এসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা কয়েকটি স্পর্শকাতর ইস্যুতে সফলতা দেখাতে পারেননি বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। এ কারণে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কালের কণ্ঠকে বলেন, অন্তত চারটি মন্ত্রণালয়ের ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে অসন্তোষ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণভবনের একটি সূত্র জানায়, আগামী ১৭ মার্চ শুরু হবে বছরব্যাপী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের বছরজুড়ে জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। এসব কর্মসূচি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ব্যস্ততা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মন্ত্রিসভায় রদবদল ও সম্প্রসারণের কাজটি সম্পন্ন করতে চান।
টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। গত বছরের (২০১৯) ৭ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেয়। এরপর গত বছরের ১৩ জুলাই পদোন্নতি পেয়ে মন্ত্রী হন ইমরান আহমদ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। এর আগে গত বছরের ১৯ মে প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়। বর্তমান মন্ত্রিসভায় ৪৭ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী রয়েছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পূর্ণমন্ত্রী ২৫ জন, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী রয়েছেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও মোস্তাফা জব্বার। মন্ত্রিসভার বর্তমান যে আকার, সে অনুযায়ী আরো দুজনকে টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রী করার সুযোগ রয়েছে।