ডেস্ক: ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরান যে হামলা চালিয়েছে তার কোনো বদলা নেয়ার হুমকি দেন নি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। উল্টো ইরান নতুন করে সামরিক হামলা চালাবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছে তাকে তিনি ইতিবাচক বলেছেন। বলেছেন, তারা যে (হামলা চালানো থেকে) ক্ষান্তি দিয়েছে, তা মঙ্গলজনক। ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা বাদ দেয়, সন্ত্রাসের পথ ত্যাগ করে, তাহলে শান্তি স্থাপনেও তিনি প্রস্তুত। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকালে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি হুমকি দিয়েছিলেন, ইরানের কোনো স্বার্থে হামলা চালালে তার কড়া প্রতিশোধ নেবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বুধবারের ওই ব্রিফিংয়ে তেমন কোনো সুরই ছিল না তার কণ্ঠে।
তবে তিনি বলেছেন, তেহরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে দেয়া হবে না। ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কোনো সেনা মারা যায় নি এবং খুব সামান্যই ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন, হামলার আগে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। বিবিসি লিখেছে, সংক্ষিপ্ত বিবৃতির শুরুতেই ট্রাম্প বলেন তিনি যতদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকবেন ইরানকে পারমানবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেবেন না। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেবেন, যা ততদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে, যতদিন ‘ইরান তার আচরণ না বদলাবে।’ তবে এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ১৯৭৯ সাল থেকে ইরানের বহু আপত্তিকর কর্মকান্ড সহ্য করা হচ্ছে, অনেক হয়েছে আর নয়। তবে একইসাথে তিনি বলেন, ইরান একটি মহান দেশ হতে পারে, সে যোগ্যতা তাদের রয়েযছে। আমাদের সবার এখন উচিৎ ইরানের সাথে নতুন একটি চুক্তির চেষ্টা করা, যাতে করে বিশ্ব নিরাপত্তা বাড়ে। ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের যে দাবি ইরাকের পার্লামেন্ট করেছে, সে ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি ট্রাম্প। তবে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের তেলের কোনো প্রয়োজন আমেরিকার নেই। একইসাথে ট্রাম্প বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অধিকতর ভূমিকা নেওয়ার জন্য ন্যাটো জোটকে বলবেন। কাসেম সোলায়মানিকে হত্যার পক্ষে আবারো যুক্তি তুলে ধরেন তিনি। নিহত ইরানি জেনারেলকে সন্ত্রাসী হিসাবে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তার হাত হাজার হাজার ইরানি এবং আমেরিকানের রক্তে রঞ্জিত ছিল।
এর আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার মাধ্যমে তারা আমেরিকার মুখে চপেটাঘাত করেছেন। তার ভাষায়, গতরাতে আমরা তাদের মুখে চড় মেরেছি। ১৯৭৮ সালের কোম বিক্ষোভের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আয়াতুল্লাহ খামেনি এ কথা বলেন। এ সময় সমবেত জনতা ‘আমেরিকার নিপাত যাক’ শ্লোগান দেয়। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আরো বলেন, যখন সংঘাতের প্রসঙ্গ আসে তখন এ ধরণের সামরিক হামলা যথেষ্ট নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, (মধ্যপ্রাচ্যে) আমেরিকার উপস্থিতি শেষ করে দেয়া। ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও বলেছেন, আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বিতাড়িত করতে পারলেই কাসেম সোলেইমানির হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
মতামত দিন