ঢাকা::প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন সেই ভাষণে জাতি হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনানুষ্ঠানিক কাজে এসে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর ভোট ডাকাতি করে সরকার ক্ষমতায় এসেছে। দেশের অর্থনৈতিক আজ ভঙ্গুর অবস্থায়। তারপরও দেশের মানুষ মনে করেছিলো সংকট নিরসনের জন্য একটা পথ তার এ বক্তব্যের মধ্যে থাকবে। নতুন একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার একটা ইঙ্গিত দেবেন এমনটাই জাতি মনে করেছিলো। কোনটাই তিনি করেননি। সেই সংকট নিরসনের জন্য তিনি কোন পথ দেখাননি। অন্যদিকে তিনি কিছু বক্তব্য রেখেছেন যেসব বক্তব্য সত্য নয়।
যেমন তিনি বলেছেন ৭৫ পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষ জরাজীর্ণ ছিলো, দেশের মানুষ কঙ্কাল হয়েছিলো। আমি বলি এই ঘটনা তার উল্টো। ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ওই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এ দেশে চরম দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। কিন্তু তারপরে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এ সকল দুর্ভিক্ষের সমাধান ঘটে। দেশে পটেনশিয়াল ইকনোমিক্যাল সিচুয়েশন তৈরি হয়। আজকে বাংলাদেশের যে অর্থনীতি সেই ভিত্তি তৈরি করেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যেখানে ৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হয়েছিলো, এরপর এসে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সবসময় বিএনপিকে দোষারোপ করা হয়। বিএনপি সন্ত্রাস করছে বলেছেন তারা। কিন্তু তারা ভুলে গেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা ১৭৩ দিন হরতাল করেছিলেন। সে সময় বাসে ১১ জন ব্যক্তিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো। এছাড়া অনেক লোক আহত হয়েছিলো সেই আন্দোলনের ফলে। যে রাজনৈতিক কালচার তখনও ছিলো, এটা এখনও আছে। আর এখনো এই আওয়ামী লীগ সরকারই এটা করছে। তারা হত্যা করছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা করছেন, তুলে নিয়ে গিয়ে মারছেন, আর নিখোঁজ হয়েছে, ঘুম হয়েছে এ সরকারের সময়। এই জিনিসগুলো তার বক্তব্যের মধ্যে আসেনি।
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের মধ্যে যে আশা ভরসা রাখার জন্য বলেছেন, সে আশা ভরসা মানুষ কোথা থেকে রাখবে। দেশের অর্থনীতির চরম বিপর্যয় আছে। তিনি বলছেন, আস্থা রাখার জন্য, মানুষ কোথা থেকে আস্থা রাখবে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়েছে। এমন কোন জিনিস নাই যে দাম বাড়েনি। সেক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় তারা বলছে, বাংলাদেশে এখন উন্নতির রোল মডেল। আমি বলবো, এটা হচ্ছে দুর্নীতির রোল মডেল, দুঃশাসনের রোল মডেল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর গতকাল নিজেদের আত্মতুষ্টি দেয়ার জন্য ভাষণ দিয়েছেন। কারণ তারা তো জনগণ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। জনগণের ভাষা তারা বুঝতে পারছেন না। জনগণের আওয়াজ তারা শুনছেন না। উনার বক্তব্য তারই বহিঃপ্রকাশ।