বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ বলেছেন, সিটি নির্বাচন উপলক্ষে একদিকে গ্রেপ্তার আতঙ্ক চলছে, অন্যদিকে চলছে নির্বাচনের প্রচারণা। হইচই হবে, মিছিল হবে, নির্বাচনের দু’দিন আগে দেখবেন সব ঠাণ্ডা। তিনি বলেন, গতকাল আমাদের একজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আয়োজিত ‘স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ এবং খালেদা জিয়ার জামিন প্রতিহিংসার বিচারে অবরুদ্ধ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিটি নির্বাচনকে লোক দেখানো নির্বাচন মন্তব্য করে মওদুদ বলেন, ভয়-ভীতি গ্রেপ্তার আতঙ্ক চলছে একদিকে, অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। এগুলো লোক দেখানো। এই নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রহসন ছাড়া কিছু নয়। এই নির্বাচনে আমরা অংশ গ্রহণ করছি। কারণ, আমরা জনগণের একটি রাজনৈতিক দল। আমরা মনে করি, যদি দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে এই সিটি নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরাজিত করবে।
কিন্তু সেটা তারা করতে দেবে না, এটা আমরা জানি। গণতন্ত্রের যে মৃত্যু ঘটেছে এই দেশে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার আবারও প্রমাণ করবে।
সরকার নতজানু হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিজিবির ডিজি বললেন, অনুপ্রবেশকারীরা সব বাংলাদেশী। ভারত সরকারের নাগরিক অধিকার আইনে সবচাইতে বড় ভিকটিম হবে বাংলাদেশের মুসলমানরা। যারা বহু বছর আগে যারা ভারতে চলে গেছেন, ভারতের নাগরিক হয়েছেন, ভোটার হয়েছেন, ভোট দিয়েছেন, আজকে তাদেরকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আমাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এই সরকার এত নতজানু হয়েছে যে, তারা সেটা গ্রহণ করে নিচ্ছেন। প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, তারা এটাকে গ্রহণ করে নিচ্ছেন। এর থেকে লজ্জার কথা বাংলাদেশের মানুষের জন্য আর কিছু হতে পারে না। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য সবকিছু দিয়ে দিয়েছেন।
রাজনৈতিক সংকট অনেক আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু ২০১৯ সালে এসে সেই সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। গতবছর সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আন্দোলন নিয়ে মওদুদ আহমেদ বলেন, আন্দোলন ছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি অথবা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কোনটাই সম্ভব নয়। আন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নাই। অনেকেই মনে করেন একটু সফট হয়ে গেলে কিছু একটা হয়ে যেতে পারে। কিন্তু বারবার আমরা দেখতে পাচ্ছি সেটি সম্ভবপর নয়। এই সরকারের হাত-পা বাঁধা, তারা পারবে না কোন কিছু করতে। আমাদের জন্য একটাই পথ সেটি হচ্ছে আন্দোলন। সেটি যদি আমরা করতে পারি তাহলে আমরা সফল হবো, আর করতে না পারলে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আমাদের কোনো পথ থাকবে না। কিন্তু আমি মনে করি আমরা ব্যর্থ হতে পারি কিন্তু এদেশের জনগণ ব্যর্থ হবে না। কারণ এদেশের মানুষ দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্রপ্রিয়।
আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন এক বাক্যে এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মানুষ চায় বিরোধীদল আন্দোলন করুক সরকার পতনের জন্য।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেসারুল হক, তাঁতী দলের যুগ্ন আহবায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।