ঢাকা: গণফোরামের সভাপতি, সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, যাদের কারণে রাষ্ট্র মানবতাবোধ হারিয়েছে তাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই। সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেই রাষ্ট্র এমন আচরণ করছে। তিনি বলেন, ২০১৫ সাল হবে জনগণের বিজয়ের বছর।
জাতীয় প্রেস কাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল একথা বলেন।
‘৪৩তম বিজয় দিবস ও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেণ পরিষদ সংগঠন।
এতে ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, জনগণ ক্ষমতার অধিকারী। এটা তো বাদ দেয়া যায় না। তাই অসহায় বোধ করার কোনো কারণ নেই। সরকারের লোকেরা ক্ষমতার মালিক এমন মনে করতে পারেন। কিন্তু দুর্বল করে রাখার অপচেষ্টা থেকে বাঁচতে হবে। তাই ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। বলতে হবে আমি এই দেশের মালিক। এই ক্ষমতা আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি সরকারেই কালা-বোবা লোক থাকে। তবে সবাই কালা-বোবা হয় না। এই সরকারের সবাই কালা-বোবা না।
শিশু জিয়াদ নিহত হওয়ার ঘটনাকে সরকারের ব্যর্থতা আখ্যা দিয়ে ড. কামাল বলেন, আল্লাহ মানুষের মুখ দিয়েছেন কথা বলার জন্য। আপনারা কালা-বোবা না থেকে কথা বলেন। ব্যর্থতার কথা বলেন। আর আমাদের মতো যাদের দূরে সরিয়ে দিয়েছেন তাদের কথাগুলো শুনুন যুক্তিযুক্ত কিনা। যুক্তি থাকলে তা মানুন। আর যেসব সংসদ সদস্য মনে করেন আপনাদের সঙ্গে সরকারের মিলছে না, তারা সরে দাঁড়ান। আপনাদের ১৬ কোটি মানুষের কথা শুনতে হবে।
সর্বোচ্চ আদালতের দেড়শ’ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। অনেক সুনাম অর্জন করেছিল আদালত। সেটা নিয়ে আমাদের গর্বও অনেক। সে আদালতকে যদি রক্ষা করতে না পারি, স্বাধীনতা অর্থহীন হবে। সরকারের বিরুদ্ধে আদেশ চেয়ে না পেলে স্বাধীনতা অর্থহীন হবে।
তিনি জানান, কোর্ট খুলবে আগামী ৫ তারিখ। সেদিন তিনি আদালতে যাবেন। ভবিষতেও যত আদালত অবমাননার শুনানি হবে সব কয়টিতে যাবেন বলে তিনি জানান। অবমাননার জন্য যারা প্রশ্রয় দিচ্ছে সেটা সবচেয়ে বড় অবমাননা বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের সর্বত্র আজ মানবতার ফরিয়াদ। যারা শুনলে প্রতিকার হয়, তারা শোনে না। কিন্তু তাদের শোনার জন্য ব্যবস্থা করতে হবে।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, সাবেক সদস্য সদস্য গোলাম মওলা রনি, ব্যারিস্টার মেজর (অব.) সারোয়ার হোসেন, সাংবাদিক কাজী সিরাজ প্রমুখ।