ভারতে নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হওয়ার পরও ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পিছু হটার বিন্দুমাত্র কোনো ইঙ্গিত দেননি।
দিল্লিতে রোববার এক জনসভায় ভাষণে তিনি বরঞ্চ বলেছেন, যে সংসদ এবং যে এমপিরা এই আইন পাশ করেছে তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করতে।
তিনি বলেন, “আমাদের উচিৎ সংসদ এবং এমপিদের সম্মান করা।”
দিল্লিতে মোদি যখন বিতর্কিত এই আইনের পক্ষে তার বক্তব্য দিচ্ছিলেন, ভারতের বিভিন্ন শহরে পুলিশের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে।
নিহতের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়ে গেছে। অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তর প্রদেশে। বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ করা হলেও, উত্তর প্রদেশ পুলিশ বলেছে, তারা কোথাও গুলি চালায়নি।
এতগুলো মৃত্যুর কোনো প্রসঙ্গ তার ভাষণে না থাকলেও, চলমান বিক্ষোভের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদি তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, বিরোধীরা এই আইন নিয়ে “মিথ্যা এবং ভুল” তথ্য রটিয়ে বেড়াচ্ছে।
ভারতীয় মুসলিমদের তিনি আবারো আশ্বস্ত করে বলেছেন, “এই আইন নিয়ে তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই।”
তিনি বলেন, তার সরকার কখনই কোনো নীতি বাস্তবায়নের সময় কারোর কাছ থেকেই “তার ধর্মীয় পরিচয় জানতে চায় না।”
ভারতের মুসলিমরা ভয় পাচ্ছে, নাগরিক তালিকা বা এনআরসি এবং নতুন এই নাগরিকত্ব আইন ব্যবহার করে তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে ফেলা হবে।
তবে সরকার বার বার বলছে, পাশের তিনটি মুসলিম প্রধান দেশের ‘নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের’ আশ্রয় দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই আইন করা হয়েছে।
আর এই আইনের বিরোধীরা বলছেন, এই আইনে মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বিজেপি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
তাদের বক্তব্য, ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর পথে একটি পদক্ষেপ হিসাবে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি এই নাগরিকত্ব আইন করেছে।
সূত্র : বিবিসি