গ্রাম বাংলা ডেস্ক: আসন্ন পবিত্র রমজানের প্রথম দিন থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে পবিত্র রমজান মাসে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত সব প্রতিষ্ঠানে অফিসের সময়সূচি নির্ধারণ কালে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রীকে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রী এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি সূত্র এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নয়া দিগন্তকে।
পবিত্র রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির রেওয়াজ চলে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। কিন্তু বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ২০০৮ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পবিত্র রমজানে ১ম দশ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে কাস নেয়ার নির্দেশ জারী করেন। এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বার্ষিক ছুটির ক্যালেন্ডারও এভাবেই সাজানো হয়ে আসছিল গত কয়েক বছর থেকে। এবার রমজানের আগেই তাতে বাদ সাধের খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ১০ রমজানের পর থেকে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ সকল শিাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী রমজানের শুরু থেকেই ছুটি ঘোষণার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমিয়ে আনুন। তবু পুরো রমজান ছুটি থাকুক।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেষে একজন মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মন্ত্রী বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তার আগের অবস্থানের পক্ষে মত দেয়ার চেষ্টা করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজান মাসে মায়েদের সেহরির খাবার তৈরি এবং সকালে বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেয়ার কষ্ট হয়। এ ছাড়া অনেক মা এখন শিক্ষক। প্রধানমন্ত্রী মায়েদের কষ্ট লাঘবে ছুটির পক্ষে মত দেন এবং প্রথম রোজা থেকেই স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার কথা বলেন।
এদিকে, মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের শিক্ষামন্ত্রী কারিগরি শিক্ষা সপ্তাহ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিং-এ বিষয়টি প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা ঐ নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ছুটির বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ নির্দেশনা জারী করা হবে। এ ছাড়া বার্ষিক ছুটির তালিকাও সংশোধন করা হবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত পবিত্র রমজানের ১০ তারিখ পর্যন্ত স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা খোলা রাখার নির্দেশ ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। গত বছর হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় অজুহাতে কাস না হওয়ার তি পুষিয়ে নেয়ার কথা বলে শিা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রোজার ছুটি ১৭ দিন কমিয়ে আনার চেষ্টা করেন শিক্ষা মন্ত্রী। কিন্তু বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে পরে তা বাতিল করতে বাধ্য হন মন্ত্রী।