ঢাকা:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যদি কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করতো তাহলে দেশে বারবার ক্যু হতো না। জনগণের ওপর এত অত্যাচার হতো না। জাতিকে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে না পারার খেসারত দিতে হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৯তম বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে এত বড় ঘটনা ঘটলো, জাতির পিতাকে হত্যা করা হলো, কেউ আগে থেকে কিছু জানতে পারলো না! কেউ কোনও পদক্ষেপ নিলো না, কেউ কোনও প্রতিবাদ করলো না! জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লাশ পড়ে থাকলো ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে! কেন এত বড় সংগঠন, এত নেতা কোথায় ছিল! শেখ হাসিনা আরও বলেন, এর উত্তর এখনও আমি পাইনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশ গঠনের কাজ পুরোদমে শুরু করেছিলেন। দেশ যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত অবস্থা কাটিয়ে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, সে সময় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। থেমে যায় বাংলাদেশের অগ্রগতি।
বারবার ক্যু হয়। রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ, সেই বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে চলে গিয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে তাদের বসানো হয়েছিল ক্ষমতায়। অথচ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আমরা দ্রুতই উন্নতির দিকে অগ্রসর হতে পারতাম। অনেক আগেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করবো, দারিদ্র্যের হার নামিয়ে আনবো। যে দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হলে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হবে, সে দেশের দারিদ্র্যের হার ১৮ শতাংশ। আমার লক্ষ্য হচ্ছে এ দেশে দারিদ্র্যের হার ওই ১৮ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ হলেও কম হবে। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে বাংলাদেশকে আমরা স্বাধীন করেছি। অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, নীতি-আদর্শিকভাবে যেভাবেই হোক আমরা ওই পাকিস্তানের ওপর থাকবোই। সত্যি আজ আমরা তাই আছি। সবার চেয়ে ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু এটা ধরে রাখতে হবে। আমরা সবসময়ই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকবো। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও কিছু পাকিস্তানপ্রেমীদের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সবাইকে এদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সভাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।