প্রথম পর্যায়ে ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতা এবং পাকিস্তানিদের দোসর হিসাবে হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িত থাকা ব্যক্তিদের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আজ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে একাত্তরের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসের এই তালিকা প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এছাড়া প্রাথমিকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকাও প্রকাশ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, আমরা কোন তালিকা করছি না। যারা একাত্তরে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বা স্বাধীনতাবিরোধী হিসাবে পাকিস্তানি সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন এবং যেসব পুরোনো নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত ছিলো, সেটুকু প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০৭৮৯ জনের তালিকা প্রকাশ করা হলো। এ তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে (www.molwa.gov.bd) পাওয়া যাবে।
তৎকালীন বিভিন্ন জেলার রেকর্ড রুম হতে এবং ওই সময়ে বিজি প্রেসে ছাপানো তালিকাও সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে। যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে আরও তালিকা প্রকাশ করা হবে।
স্বাধীনতাবিরোধীরা দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বা স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকা ও নথিসমূহ বিনষ্ট করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
মুক্তযোদ্ধাদের প্রসঙ্গে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, শেখ হাসিনার সদয় নির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ১০ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগামী ২৬শে মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। বর্তমান তথ্য মতে, কোন না কোন তালিকায় অন্তর্ভূক্তির সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৬ জন। এর মধ্যে দাবিদার মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ জন। বর্তমানে ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ১ হাজার ৪৬১ জন। কিন্তু এই ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ সংখ্যক তালিকার অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামে একাধিক গেজেট/অন্যান্য দলিল থাকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেশি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি নয়। একাধিক দলিলভূক্ত মুক্তিযোদ্ধাগণের চূড়ান্ত একক তালিকা তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।