খুলনা: মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোতে শ্রমিকদের আমরণ অনশন তিন দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে খুলনার বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের মতবিনিময়ে এই সিদ্ধান্ত হয়। এ সময়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাটকল শ্রমিকদের অনশন ধর্মঘট নীতিগতভাবে স্থগিতের ব্যাপারে একমত পোষণ করেন পাটকল সিবিএ ও ননসিবিএ নেতৃবৃন্দ। পরে রাত সোয়া ১টায় শ্রমিক নেতাদের দেওয়া তিনদিনের স্থগিতাদেশ মেনে নেয় সাধারণ শ্রমিকরা।
মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাশ হয়েছে। এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে।
প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের বলেন, দাবি-দাওয়া পূরণ করতে একটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ প্রেক্ষাপট তৈরি করা দরকার। তাই শ্রমিকদের স্বার্থে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন। এছাড়া জাতীয় মজুরি কমিশন ২০১৫ বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আগামী ১৫ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি)’র সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে শ্রমিকরা জানিয়েছেন, সাময়িকভাবে এ আন্দোলন স্থাগিত করা হলেও তাদের দাবি বাস্তবায়ন না হলে আবারো আন্দোলনে নামবে তারা। তাই মন্ত্রীর আশ্বাসে আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হলেও আন্দোনের স্থলে প্যান্ডেল স্টেজ সব ঠিক থাকবে।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সাহানা শারমিন বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের সভায় দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারো অনশন পালন করা হবে।
এদিকে অনশন কর্মসূচির চতুর্থ দিন শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত অসুস্থ এক শ্রমিকের মৃত্যু এবং প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থদের খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এছাড়াও অনশনস্থলে শতাধিক শ্রমিককে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ নন-সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে শ্রমিকরা ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।