বীরগঞ্জে কুড়ি জোড়া তরুণ-তরুণীর যৌতুক বিহীন বিয়ে

Slider জাতীয় বিচিত্র রংপুর


এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল এর উপস্থিতিতে কুড়ি (২০) জোড়া এতিম, দুস্থ ও অসহায় তরুণ-তরুণীর যৌতুক বিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। শুধু যৌতুক বিহীনই নয়, বরং নব দম্পতিদেরকে দেয়া হয়েছে নতুন পরিবার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও। যৌতুকের কু-প্রভাব এবং ধর্মীয়ভাবে যৌতুক দেয়া-নেয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রতিটি ঘরে ঘরে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এমন আয়োজন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকাল ৫টায় বীরগঞ্জের বটতলী ফয়জিয়া মদিনাতুল উলম মাদ্রাসা মাঠ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামা ও ইসলাহুল মুসলিমীন পরিষদ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের তত্ত্বাবধানে দিনাজপুর প্রতিনিধি মাওলানা আইয়ুব আলী আনসারীর সভাপতিত্বে এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন কালে উৎসুক জনতার ঢল নামে।

অনুষ্ঠানে বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়ামিন হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা এস.এম.এ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. নুর ইসলাম নুর ও যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শামিম আলম ফিরোজ, সাতোর ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শেখ, জেলা পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান বাবু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা আক্তার বৃষ্টি সহস্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গও উপস্থিত ছিলেন।

কুড়ি জোড়া তরুণ-তরুণীকে বর ও কনে সাজিয়ে আনা হলে প্রধান অতিথি দিনাজপুর-১ আসনের স্থানীয় এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল এসময় ২০ জন কনেকে বিয়ের শাড়ি প্রদান করেন। একইসাথে আয়োজক গন দাম্পত্য জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনায় তাদের জন্য দোয়া কামনা করে নব দম্পতিদের হাতে সেলাই মেশিন, ছাগল, লেপ-তোশক, হাড়ি-পাতিলসহ রান্নাঘরের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তাদের হাতে তুলে দেয়।

প্রধান অতিথি এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। আর এই ব্যাধি দুর করার জন্য সরকার প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি সকলে যৌতুকের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ালে সামাজিক অবক্ষয়ের হাত থেকে মুক্ত হবে সমাজ। যৌতুক দেয়া কিংবা নেয়া ধর্মীয়ভাবেও নিষিদ্ধ। এই ধরনের বিয়ে সেই বার্তায় পৌছে দেবে প্রতিটি ঘরে ঘরে। তিনি নতুন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ তরুণ-তরুণীদের সামাজিক জীবনে সর্বত্র সাফল্য কামনা করে যৌতুকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, এ জাতীয় উদ্যোগে আমাদের সমাজ সুন্দরের পথে হাঁটবে, সমাজ কুসংস্কারমুক্ত হবে।

আয়োজকরা জানান, এসব কনের বাবা-মা অত্যন্ত গরীব। তাদের বিয়ে দেয়ার সামর্থ নেই বললেই চলে। আর তাই বিয়ের এমন আয়োজন করা হয়। উদ্দেশ্য কনেকে যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দেয়া একই সাথে যৌতুকের ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে যৌতুকবিহীন বিয়েতে সাধারন মানুষের মাঝে এই বার্তা পৌছে দেয়া। এ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অসহায় তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যারা খরচের ভয়ে বৈবাহিক জীবন গঠন করতে পারেন না তাদের জন্যই যৌতুকবিহীন বিয়ের এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া এই ধরনের বিয়ের মাধ্যমে যৌতুকের যে কু-প্রভাব সেটি তুলে ধরা এবং যৌতুক দেয়া কিংবা নেয়া যে ধর্মীয়ভাবে নিষেধ সেটিও জনগনের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ায় এই লক্ষ্য।
একই অনুষ্ঠানে কুরআন শিক্ষায় ৪৬ জন শিক্ষার্থীকে সনদপত্র বিতরণ করেন প্রধান অতিথি এমপি গোপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *