ভারতীয় লোকসভা ও রাজ্যসভায় গৃহীত নাগরিকত্ব সংশোধন বিলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত সংবাদ সন্মেলনে বলেন, প্রকৃত অর্থে, এ বিল আইনে পরিণত হলে বস্তুত একদিকে এদেশে তা অধিকতর নিরাপত্তার আশায় সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে উৎসাহিত করতে পারে, দেশের অভ্যন্তরে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এদের অংশগ্রহণ নিরুৎসাহিত হতে পারে। অন্যদিকে, ১৯৭৫-র বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর থেকে সংখ্যালঘুদের জীবন, পরিবার ও সম্পদের উপর আক্রমণ চালিয়ে যারা তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করেছে, এ বিল আইনে পরিণত হলে তা তাদের সাম্প্রদায়িক নির্যাতন, নিপীড়ন, ভূমি দখল, ধর্মান্তরকরণ ইত্যাদি অব্যহত রেখে সংখ্যালঘুদের দেশছাড়া করার জন্যে এবং বাংলাদেশকে এক ধর্মীয় রাষ্ট্রে পরিণত করার তাদের রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা বাস্তবায়নের জন্যে অধিকতর উৎসাহিত করবে।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিলোপ করে পরবর্তীতে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে সংযোজনের মধ্য দিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি জাতিসত্বাকে বিভাজিত করা হয়েছে এবং সাম্প্রদায়িকতাকে রাষ্ট্রীয়করণ করে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ কম বেশি অব্যাহত আছে। নানান ক্ষেত্রে ধর্মীয় বৈষম্য এখনো বহুলাংশে বিদ্যমান। সাম্প্রদায়িক নির্যাতন নিপীড়নও অব্যাহত আছে। বহুত্ববাদী সমাজ থেকে বাংলাদেশ ক্রমশঃ দূরে সরে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এ সব সমস্যার মৌল সমাধান বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক, সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে নিহিত রয়েছে বলে মনে করে।
সংবাদ সন্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ড. নিমচন্দ্র ভেমিক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, জে এল ভৌমিক, নির্মল রোজারিও, মঞ্জু ধর, মনীন্দ্র কুমার নাথ, এ্যাড. তাপস পাল, এ্যাড. কিশোর মন্ডল, রবীন বসু, এ্যাড. দিপংকর ঘোষ, পদ্মাবতী দেবী, চন্দন বিশ্বাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।