কলকাতা: সংসদে পাশ হতে যাওয়া নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে আসাম, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা। গতকাল থেকে চলছে বনধ। বনধের ফলে গুয়াহাটি বিমানবন্দরে আটকে পড়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল। বিক্ষোভ আন্দোলনের জেরে আসাম ও ত্রিপুরার অনেক জায়গাতেই হিংসা ছড়িয়ে পড়েছ্।ে অভিযোগ, জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে অ-জনজাতি মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে বেশ কিছু এলাকায় সেনা নামানো হয়েছে। সেনা নামানো হয়েছে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর ও মনু এলাকায়। অসমের অসমের বঙ্গাইগাঁও ও ডিব্রুগড়েও নামানো হয়েছে সেনাকে। সেনাবাহিনী উপদ্রুত এলাকাতে শান্তি বহাল রাখতে ফ্ল্যাগ মার্চ শুরু করেছে।
গত কয়েকদিন ধরেই উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে ছাত্ররা নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন। তবে সোমবার লোকসভায় বিলটি পাশ হওয়ার পর সেই আন্দোলন আরও তীব্র হয়েছে। আসামের ছাত্রদের অভিযোগ, এই বিলের ফলে বাংলাদেশ থেকে ¯্রােতের মত হিন্দুরা আসবেন। অন্যদিকে জনজাতিরা তাদের অধিকার যাতে কোনভাবে খর্ব না হয় সেজন্য আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। তবে দ্রুত তাদের আন্দোলন জাতিদাঙ্গার রুপ নিতে চলেছে বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন। উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুরে বন্ধ সমর্থকদের হঠাতে পুলিশকে শূন্যে ১০ রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছেন এসডিএম অভেদানন্দ বৈদ্য। কাঞ্চনপুরের আনন্দবাজার এলাকায় আতঙ্কিত অ-জনজাতি বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে না পেরে থানায় এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদেরকে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন বন্ধ সমর্থকরা। ধলাই জেলার মনুঘাট এবং ৮২ মাইল বাজারে একের পর এক দোকানে আগুন লাগিয়েছে বন্ধ সমর্থকরা। ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়েছে। বিলের প্রতিবাদে গুয়াহাটিতেও পথে নেমেছে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। অবরোধ চলছে দিসপুরে যাওয়ার পথে মূল সড়ক গুয়াহাটি-শিলং রোডে। অবরোধ ওঠাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিযেছে। পরিষসেবাও বন্ধ রাখা হযেছে। ত্রিপুরায় গত মঙ্গলবারই ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এদিন আসাম ও ত্রিপুরায় বহু জেলাতেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে বনধ, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ আন্দোলনের ফলে।