ডেস্ক | ভারতের নিম্নকক্ষ লোকসভা বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস করেছে। এই বিলের অধীনে মুসলিমদের বাদ দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। সোমবার পার্লামেন্টের ভিতরে চরম উত্তেজনাপূর্ণ দৃশ্য এবং দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রতিবাদ বিক্ষোভের মধ্যে এই বিলটি পাস হয়েছে। এসব কথা লিখেছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে আরো বলা হয়েছে, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের প্রস্তাবিত এই বিলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নির্যাতিত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানদের ভারত নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। লোকসভায় সোমবার দিবাগত মধ্যরাতের পরে এ বিলের ওপর ভোট হয়। এর পক্ষে ভোট পড়ে ৩১১টি। বিপক্ষে পড়ে ৮০ ভোট।
বিলটি পাস হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক টুইটে তিনি বলেছেন, বিলটি ভারতের বহু শতাব্দীর পুরনো মানবিক মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পর্কিত।
তবে মুসলিমদের সংগঠন, মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো এবং অন্যরা এই বিলকে দেখছেন অন্যভাবে। তারা মনে করছেন এর মাধ্যমে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু ২০ কোটি মুসলিমকে কোণঠাসা করতে করা হয়েছে এই বিল। বিলটির বিষয়ে আতঙ্ক প্রকাশ করে সোমবার একটি যৌথ চিঠি প্রকাশ করেছেন ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একশত বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞজন। তাতে তারা বলেছেন, ভারতের সংবিধান সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে সমান আচরণ করার কথা বলা আছে। কিন্তু মোদির ‘প্রস্তাবিত এই বিলটি সেই ইতিহাস ভঙ্গ করবে এবং তা হবে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্য’। এই চিঠিতে আরো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এভাবে সতর্কতার সঙ্গে মুসলিমদের বাদ রাখা হলে তাতে ভারতের বহুত্ববাদে বড় রকমের টান পড়বে।
ওদিকে বিলের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে সার্বিক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে প্রথম সারির রাজনৈতিক গ্রুপগুলো। বিলের মাধ্যমে মুসলিমদের কোণঠাসা করে ফেলার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেছেন, এই বিলটি হলো অধিকার দেয়ার জন্য। কারো কাছ থেকে অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য নয়।