বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) র্যাগিংয়ে জড়িত থাকায় আহসানউল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী আবাসিক হলের ২৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দিয়েছে প্রশাসন। ৯ ছাত্রকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কার ও ৪ থেকে ৭ টার্ম পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও ৪ শিক্ষার্থীকে করা হয়েছে সতর্ক। র্যাগিংয়ে জড়িত আহসানউল্লাহ হল থেকে বহিষ্কৃত ৬ শিক্ষার্থী হলেন, সব্যসাচী দাস, সৌমিত্র লাহিড়ী, প্লাবন চৌধুরী, নাহিদ আহমেদ, অর্ণব চৌধুরী ও ফরহাদ হোসেন। এছাড়া একই সাজা প্রাপ্ত সোহরাওয়ার্দী হলের ৩ শিক্ষার্থী হলেন, মো. মোবাশ্বের হোসেন, এ এস এম মাহাদী হাসান ও আকিব হাসান রাফিন।
সোহরাওয়ার্দী হলের ১৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন, কাজী গোলাম কিবরিয়া, সাকিব হাসান, মো. সাজ্জাদুর রহমান, সাকিব শাহরিয়া, শেখ আসিফুর রহমান, মো. রাইয়ান তাহসিন, মেহেদী হাসান, তৈয়ব হোসেন, এ এফ এম মাহফুজুল কবির, মো. বখতিয়ার মাহবুব, সৈয়দ শাহরিয়ার আলম, মো. তৌফিক হাসান, মো. কুতুবুজ্জামান, মোহাম্মদ তাহমিদুল ইসলাম, ফেরদৌস হাসান, মো. আল-আমিন ও তাহাজিবুল ইসলাম।
আজ বিকালে বুয়েটের ভিসি’র কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক এবং বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্যসচিব মিজানুর রহমান। তিনি এসময় বলেন, আহসানউল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী হলের র্যাগিংয়ের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে ২ হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিতুমীর হলের র্যাগিংয়ের ঘটনার অধিকতর তদন্তের জন্য আরেকটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী রোববারে প্রতিবেদন জমা দিলে ওই হলের র্যাগিংয়ের ঘটনায়ও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মিজানুর রহমান আরো বলেন, গত বুধবার বুয়েটের ভিসির সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ২৮শে ডিসেম্বর থেকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা দিতে তারা প্রস্তুত। এসময় তিনি প্রশাসন তাদের দাবির বিষয়ে একমত এবং সচেষ্ট উল্লেখ করে দ্রুত স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে আসার আহ্বান জানান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মাহমুদুর রহমান বলেন, আগামী সপ্তাহে তারা তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
উল্লেখ্য, গত ৬ই অক্টোবর রাতে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে শাখা ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী। শেরে বাংলা হলের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আন্দোলনে ফুঁসে ওঠে শিক্ষার্থীরা। আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন তারা। তাদের দাবির একটি ছিল আহসানউল্লাহ, সোহরাওয়ার্দী ও তিতুমীর হলে আগে ঘটে যাওয়া র্যাগিংয়ের ঘটনাগুলোতে জড়িতদের বিচার ও শাস্তি। তাদের এ দাবি মেনেই শিক্ষার্থীদের শাস্তির আওতায় এনেছে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।