বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, বিভিন্ন পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন সামনে। এ কারণে অপপ্রচার চালিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিভ্রান্তি ছড়িয়ে গাড়িচালকদের কর্মবিরতিতে নিয়ে যেতে যড়যন্ত্র করছে কেউ। বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মসূচির বিষয়ে নিজের অবস্থান ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আগামী ২১ ও ২২ নভেম্বর বর্ধিতসভা আহ্বান করেছি। সেখানে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা সারা দেশ থেকে আসবেন।’ বর্ধিতসভা ডাকার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সভায় আমরা শ্রমিক প্রতিনিধিদের মতামত জানব। সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ নিয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণ আমরা সরকারের কাছে তুলে ধরব।’
কিন্তু সভার আগেই কেন কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে জানতে চাইলে এই পরিবহন শ্রমিক নেতা বলেন, ‘সভার আগেই কে বা কারা পরিবহন শ্রমিকদের উসকানি দিচ্ছে। আমরা তো দিচ্ছি না। বলা হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনার দায়ে চালকদের ফাঁসি হবে—এটা নতুন আইনে আছে। আসলে সেটা নতুন আইনে নেই। নতুন আইনে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে পাঁচ বছরের জেল ও সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড। আমাদের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেছেন, আইন প্রয়োগে কেউ যেন অযথা বাড়াবাড়ি না করে। আমি বলব, যাদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে তারা এটি করছে। বিচ্ছিন্নভাবে এসব কর্মসূচি করা হচ্ছে। বিচ্ছিন্নভাবে এটা করার অর্থ সমস্যার সমাধান চাওয়া নয়, বরং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।’
শাজাহান খান বলেন, ‘আইনের সংশোধন কোথায় কোথায় করতে হবে, তা আমরা চিহ্নিত করব ফেডারেশনের আসন্ন বর্ধিতসভায়। তারপর আমরা সরকারের কাছে ডিমান্ড জানাব। সড়কমন্ত্রীও বলেছেন, আইনের সংশোধনের সুযোগ আছে। তবে শ্রমিকরা হয়রানির শিকার হলে আমি তাদের সঙ্গে থাকব। ৪৮ বছর ধরে আমি তাদের সঙ্গে আছি। বিএনপি-জামায়াতের পেট্রলবোমার রাজনীতির সময়ও আমরা শ্রমিকদের পক্ষে ছিলাম। আমরা এ আইন সংশোধনের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির সঙ্গে বসেছিলাম। তারা কয়েকটি বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছে।’
বিভিন্ন জেলায় পরিবহন শ্রমিকরা যে ধর্মঘট ও কর্মবিরতি পালন করছে তার সমাধান কিভাবে সম্ভব জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, ‘আমি এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের বলব গুজবে কান না দিতে। তাদের বলব গাড়ির চাকা সচল রাখতে।’