হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায় আগামী ২৭শে নভেম্বর। আলোচিত ওই মামলার বিচার শুরুর পর প্রায় এক বছরের মাথায় গতকাল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারওয়ার খান জাকি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের চার দিনব্যাপী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে বিচারক মামলার রায়ের জন্য ২৭শে নভেম্বর তারিখ ধার্য করেন। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন বলে দাবি করে আসছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। ২০১৮ সালের ২৬শে নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ৩রা ডিসেম্বর মামলার বাদী এসআই রিপন কুমার দাসের জবানবন্দি নেয়ার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হয়েছিল। তার আগে দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির ওই বছরের ২৩শে জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ২০১৬ সালের ১লা জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে গলাকেটে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
পরে কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী হিসেবে চিহ্নিত পাঁচ তরুণর সবাই মারা যায়। নব্য জেএমবি ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় হামলা চালিয়ে নিজেদের সামর্থের জানান দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে শরীয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে এই হামলার ছক কষেছিল বলে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে। হামলায় জড়িত হিসেবে যে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হয় হামলার পর এসআই রিপন কুমার দাসের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলাটিতে। আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। গতকাল রায়ের তারিখ ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেয়ার সময় তারা সবাই নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে যে ১১৩ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়, তার মধ্যে সর্বশেষ জন ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।