কালীগঞ্জে টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নবান্ন উৎসব পালিত

Slider গ্রাম বাংলা


কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি: প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালির জীবনে নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সং¯ৃ‹তির নানা দিক। নবান্ন ঐতিহ্যের উৎসব ও তার ইতিহাস অজানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে। বাঙালির হাজার বছরের পুরনো এই উৎসবটি স্থায়ীভাবে জাগ্রিত রাখার প্রত্যয় নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যার পর নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন আত্মমানবতার সংগঠন টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।

একতা, সঞ্চয়, সমৃদ্ধি এই ¯েøাগানকে সামনে রেখে গাজীপুরের কালীগঞ্জের কিছু শিক্ষিত তরুণ বন্ধুরা মিলে ৮ বছর আগে এই দিনে টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত করে। শুক্রবার ছিল এই সোসাইটির ৮ম বর্ষপূতি। চলো মিলি সবায় নবান্ন উৎসবে এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কালীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সংলগ্ন গুণ মার্কেটে সোসাইটির কার্যালয়ে হরেক রকমের পিঠেপুলি মঞ্চের সামনে সাজিয়ে রেখে সংগঠনের ৮ম বর্ষপূতি পালন করা হয়।

টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সহ-সভাপতি কাজী গোলাম রাব্বানী রোমানের সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান রুবেলের পরিচালনায় নবান্ন উৎসবে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ পৌর মেয়র মো. লুৎফুর রহমান, কালীগঞ্জ উপজেলার দুর্নীতি প্রতিরোধের সভাপতি ও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আজাদ ফারুকউদ্দিন আহমেদ, গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য শফিউল কাদের নান্নু, কালীগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. ইব্রাহীম খন্দকার ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান আরমান প্রমুখ।

চিতই পিঠা, দুধ চিতই, তিলকুলি, পাটি শাপটা, ভাপা, তেলের পিঠা, হালুয়া, পায়েস, পিঠা পায়েসসহ হরেক রকমের পিঠেপুলির সাথে হাঁসের মাংস, টার্কির মাংস, লোনা ইলিশের ভর্তা, রুটি, দই ও চিড়া সুস্বাদু খাবারের গন্ধ বইতে থাকে নবান্ন উৎসবে। এ উৎসবে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা মঞ্চে সাজিয়ে রাখা সুস্বাদু পিঠেপুলি যিনি যেটি পছন্দ করে তা তারা খেতে মেতে উঠেন।

মানব কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত সংগঠন টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এমন ব্যতিক্রম আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে সম্মানিত অতিথিরা তাদের বক্তৃতায় বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি জাতি ধর্ম-বর্ণকে উপেক্ষা করে নবান্নকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে উঠতো। নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা হতো পিঠা পায়েস, ক্ষীরসহ হরেক নানা রকম খাবার। অগ্রহায়ণ কৃষকের নতুন বার্তা নিয়ে আগম ঘটে। নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। সোনালি ধানের প্রাচুর্য আর বাঙালির বিশেষ অংশ নবান্ন ঘিরে অনেক কবি-সাহিত্যিকের লেখায় উঠে এসেছে প্রকৃতির চিত্র।
কবি জীবনানন্দ দাশ তার কবিতায় লিখেছেন- আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরেÑএই বাংলায়/মানুষ নয়- হয়তো বা শঙ্কচিল শালিখের বেশে/ হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে/কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব এ কাঁঠাল ছায়ায়। কবির কবিতার লাইনের মতোই নবান্নে চিরায়ত বাংলার রূপ। হারিরে যাওয়া নবান্ন উৎসবকে জাগিয়ে রাখতে টোয়েল্ট্রা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এমন আয়োজন বাংলার ঐতিহ্যকে লালন করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *