ঢাকা: প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বলিষ্ঠ যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে সহযোগিতা, পর্যটন ও দু’দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগের উন্নতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রেসিডেন্টের সম্মানে গতরাতে হোটেল ইয়াক এন্ড ইতি-এ নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবি ভান্ডারীর দেয়া ভোজসভায় ভাষণদানকালে আবদুল হামিদ একথা বলেন।
তিনি বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, টেকসই সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, পর্যটন ও দু’দেশের জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর মতো যেসব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যেখানে আমাদের দুই দেশের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের দু’দেশ ও জনগণের মধ্যে ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক ও ভাষার বন্ধন রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ও তাঁর সফরসঙ্গীরা কাঠমান্ডুতে পৌঁছলে তাদের সম্মান ও ঊষ্ণ আতিথেয়তার জন্য তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। আবদুল হামিদ বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধচলাকালে নেপালের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনগণের পক্ষ থেকে দেয়া নৈতিক ও বস্তুগত সহায়তার বিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ সর্বদা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশ নেপালের উন্নয়ন প্রকল্প বিশেষ করে ‘সমৃদ্ধ নেপাল, সুখী নেপাল’ ভিশন পূরণে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত। বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কার্যত বাংলাদেশকে আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে আমাদের সরকার ২০২১ সালে এই দেশকে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০৪১ সালনাগাদ উন্নত সমৃদ্ধদেশ হিসেবে দেখতে চায়। বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে সক্ষম হবে বলে প্রেসিডেন্ট আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্র ও আঞ্চলিক ফোরামে আমাদের ঐতিহ্যগত ঘনিষ্ট সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো এবং অভিন্ন প্রত্যাশা পূরণে এক সঙ্গে কাজ করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের জন্য গৃহীত কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি আশা করছি, বন্ধুপ্রতীম নেপালের জনগণ আমাদের এই আনন্দ ও সুখের মুহুর্তগুলো ভাগাভাগি করবে। এর আগে, নেপালের প্রেসিডেন্ট ভান্ডারি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেছিলেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি উভয় দেশকে অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। বিদ্যা দেবী বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সুস্বাস্থ্য এবং নেপাল ও বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। প্রেসিডেন্টের স্ত্রী রাশিদা খানম, নেপালি ভাইস প্রেসিডেন্ট নন্দ বাহাদুর পুন, প্রধানমন্ত্রী কে.পি. শর্মা অলি, সংসদ সদস্য ও নেপালের উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিগণ, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, রেজওয়ান আহমাদ তৌফিক এমপি, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক, প্রেসিডেন্টের সচিব সম্পদ বাড়–য়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল শামীম-উজ-জামান ও প্রেসিডেন্টের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।