কিষাণ: কাকডাকা ভোরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা শিউলি ফুলের সমাহার..আজ আর একটি ফুলও কুড়িয়ে হাতে নেওয়ার সাহস নেই। শুধু ভাবনার আয়না…মনে পড়ে? তুমি দু’হাত ভরে শিউলি নিয়েছিলে, আমি তাকিয়ে দেখছিলাম শুধু। কি ছেলে মানুষী করে ফুল কুড়াচ্ছিলে! দু-হাত ভরা ফুলে একটি ফুল দেওয়ার সাথে সাথে তুমি বলেছিলে, “আমার হাতে কেবল শিউলি ফুলের পূর্ণতা মিললো”। সেদিন মনে হয়েছিল ” আমি মনে হয় পৃথিবীর সেই সৌভাগ্যবানদের একজন যারা অকৃত্রিম ভালবাসা পেয়েছিল”। এরপর…
নীল-সাদা রঙের শাড়ী পড়ে কাশবনে তোমার হারিয়ে যাওয়া, ভুলা যায়! যায় না। উড়ন্ত বালি হাসগুলো না দেখিয়ে দিলে বুঝতেই পারতাম না তুমি কোথায়! সেদিন দুল্যয়মান কাশফুলের মৃদু বাতাসে ভেসেছিল সেই ঘ্রাণ… তোমার…আমার চিরচেনা..। আজ সবই ধুসর। আবেগহীন কাশফুল, বালিহাস, মৃদু বাতাস। এরপর…
বর্ষার প্রথম কদম তুমি হাতে নিয়ে বলেছিলে, “ঘ্রাণহীন ফুলটি এত অদ্ভুত রকমের সুন্দর কেন!” “তোমার জন্য” আমার অনুক্ত উত্তর। তুমি হেসেছিলে, বলেছিলে, তোমার পাগলামি দিনদিন বাড়তেছে। সাথে সেকি প্রচন্ড রাগ “আর যদি কখনো ভেজা গাছে উঠছো তুমি! লাগবেনা আমার ফুল, তুমি যদি পড়ে যেতে!” তোমার আলতো আদরে ফুল গুলো যেন তোমার হাতের তালুয় ভালবাসার ছায়াতলে মাথা গুজে নিচ্ছিলো। আমি আর কদম কি ভিন্ন ছিলাম? তুমি বলেছিলে “আর গাছে উঠবানা। পাগলামি কম করবা”। আমি মনে মনে, “পাগলামির দেখছো কি! আগে বৃষ্টি পড়তে দাও। আর বৃষ্টি হয়নি, আজও না। নাহ, বৃষ্টি হয়, কদমও হয়, শুধু পাগলামিটাই নেই।
ঘাসফুলের বানানো আংটি তোমার অনামিকায় পড়াতেই তোমার নীরব স্বীকারোক্তি ” পৃথিবীতে আমিই মনে হয় একমাত্র মেয়ে যার বাগদানের আংটিটি ঘাসফুলের তৈরি!” এখনো সেই ঘাসফুল ফুটে, হয়তো আরও বেশি! শুধু ঐ একটি ফুল ছাড়া যেটি তুমি নিয়ে গেছো তোমার অনামিকায়! তাদের কোন অভিযোগ নেই, নেই আমারও…। এরপর…
তোমার প্রিয় টাইম ফুল আজও সকাল-বিকাল রঙিন করে রাখে আমার আংগিনা। শুধু কেউ বলে না, “একটি ফুল যদি তুমি ছিড়ছো বা নষ্ট করছো তো, তোমার রাতের খাবার বন্ধ!” একটাইতো ছিড়েছিলাম, তোমার খোপায় দিব বলে! কিন্তু এত্ত ছোট ফুল! খুবই বেমানান। তুমি বলেছিলে, “তোমার আবেগ ভাল, কিন্তু জ্ঞান-বুদ্ধি কেমন যেন, ভ্যাবলা!” এখনো প্রচুর ফুল ফুটে। ছিড়ে যায়, নষ্ট হয়। কেউ বলে না, “তোমার রাতের খাবার বন্ধ”। আর হয়তো কেউ বলতেও পারবে না। এরপর…
তোমার প্রিয় নীল অর্কিড! তোমার মনে আছে?! তোমার মাথায় নীল অর্কিডের রিং। তুমি বলেছিলে, এমনও হয় নাকি! কি সুন্দর! একটু মুচকি হেসে বলেছিলে, তোমার চয়েজ এত্ত ভাল হয়ে গেল কেমনে! এত্ত খুশি তুমি! তাই বলে নাচতে শুরু করবে বুঝতে পারিনি। আমার অনুক্ত আনন্দ “আমার অর্কিড রাণী”। আজ অর্কিডের কত্ত রঙ! রাণী হওয়ার সময় নেই। চয়েজও সব বিবর্ণ। হয়তবা কালো, শুধু কালো! এরপর…
অনেকদিন পর তোমার ক্যাকটাসেরও ফুল এসেছে! ভাবসি কালই ফেলেদিব…