ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিকে গণরায়ের সঙ্গে তুলনা করে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ‘এই রায় মেনে নিন। তাঁকে অপসারণ করুন।’
রাজধানীর শাহবাগে আজ শুক্রবার বিকেলে এক সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে আনু মুহাম্মদ এ আহ্বান জানান। ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও নাগরিকবৃন্দ’-এর ব্যানারে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ হয়।
আনু মুহাম্মদ বলেন, জাবির উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের কারণে যে গণরায়ের সৃষ্টি হয়েছে, তাকে গণ-অভ্যুত্থান বললে বরং সঠিক হবে। উপাচার্য বলেছেন, ছাত্রলীগের ছেলেরা তাঁকে রক্ষা করতে গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেছে তা নয়। বরং উপাচার্য এটা বোঝাতে চেয়েছেন ছাত্রলীগ তাঁকে গণ-অভ্যুত্থান থেকে বাঁচাতে চেয়েছে।
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সিনেট প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও ফারজানা দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন দেননি। এ জন্য তাঁর প্রতিশ্রুতির জায়গা ঠিক নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। এমনকি এই টাকা রাষ্ট্রেরও নয়। এই টাকা জনগণের। এখানকার প্রতিটি টাকা ব্যবহারের জবাবদিহি জনগণের কাছে করতে হবে।
সমাবেশে জাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন, জাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও সিনেট সদস্য আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইমন হোসেন, আবু জাঈদ আজিজ, ফরিদুল হক, জাবি ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি অলিউর সান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিটন নন্দী তাঁর বক্তব্যে বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উপাচার্য যে ছাত্রলীগকে টাকা দিয়েছেন, তা আর তদন্তের প্রয়োজন রাখে না। এটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। রাব্বানীর (ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক) অডিও ফাঁস থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আগের সব অভিযোগ বাদ দিয়ে শুধু সর্বশেষ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা আমলে নিলেই ফারজানা আর পদে থাকতে পারেন না। আন্দোলনকে দমাতে ক্যাম্পাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, হল খালি করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানদারদের পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ’
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত রাষ্ট্রকেই করতে হবে। এই দায়িত্ব আন্দোলনকারীদের নয়। সরকার যে সুরে কথা বলছে তা হুমকির শামিল।