ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা সাদেক হোসেন খোকাকে দেশে আনতে পাসপোর্টের বদলে ট্রাভেল পারমিটের আবেদন করলে তা ইস্যুর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম এমপি। রোববার এক ফেসবুক পোস্টে প্রতিমন্ত্রী লিখেন, নিউইয়র্কে সাদেক হোসেন খোকার পরিবার ট্রাভেল পারমিটের জন্য আবেদন করলে আমাদের মিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তিনি এবং তার স্ত্রীর যেহেতু পাসপোর্ট নেই সেহেতু আন্তর্জাতিকভাবে অন্য দেশ থেকে নিজের দেশে ফেরার এটাই একমাত্র ব্যবস্থা। শাহরিয়ার আলম বলেন, আমি আমাদের নিউইয়র্ক কনসুলেটে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। প্রতিমন্ত্রী লিখেন- ‘তিনি (খোকা) এবং তার স্ত্রীর নামে মামলা আছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও থাকতে পারে (আমি নিশ্চিত নই)। কিন্তু মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে কথা বলে যা জেনেছি, তাদের আগমনের পর বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হবে।’ অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সম্মুখ সমরে লড়াই করা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা গত ১৮ অক্টোবর থেকে নিউইয়র্কে মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসার জন্য ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যান বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান। ২০১৭ সালে তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে তা নবায়নের আবেদন করেন।
কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিনি এখনও সেই পাসপোর্ট হাতে পাননি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের কয়েকদিন আগে সাবেক মন্ত্রী খোকা গ্রেপ্তার হন। কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলে তার শারীরিক জটিলতা ধরা পড়ে। তিনি ঢাকায় কিছুদিন চিকিৎসাও নেন। কিন্তু চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণ শনাক্ত করতে পারেন নি। এ অবস্থায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করার মত অবস্থায়ও নেই। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। তার জীবন শেষ ইচ্ছা ঢাকায় ফেরা। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পাসপোর্ট নবায়ন না হওয়া।
প্রসঙ্গত, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে (ন্যাপ) যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে পা রাখেন সাদেক হোসেন খোকা। পরে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন ও দলের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি হন। ১৯৯১ সালে সূত্রাপুর-কোতোয়ালি আসন থেকে খোকা প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হন। ২০০১ সালে একই আসন থেকে তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে ২০০২ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। তিনি প্রায় ৯ বছর ওই পদে দায়িত্ব পালন করেন।