নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়নগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে বদলি করা হয়েছে। তাকে নারায়ণঞ্জ থেকে ঢাকার হেড কোয়ার্টারে পুলিশ সুপার টিআর হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যার দিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখার উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার হিসেবে পরপর তিনবার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হন মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। মাদক উদ্ধার, মামলার রহস্য উদঘাটন, ওয়ারেন্ট তামিল, শিল্প এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাসহ তার কর্তব্যরত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক হওয়ায় তিনি এ সম্মানে ভূষিত হন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালনের আগে তিনি গাজীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন। ক্যারিয়ারে তিনি ৩ বার বিপিএম ও ২ বার পিপিএম পদক পেয়েছেন।
২০১৮ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণে প্রশংসনীয় হন। এ অবদানের জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক “বিপিএম” (বাংলাদেশ পুলিশ পদক) ব্যাচ পরিয়ে দেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন থানার হোসেনপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা- আবদুল হাসেম, মাতা-জহুরা খাতুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স, এমএসএস, এলএলবি (জাবি) থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন হারুন অর রশীদ।
সর্বশেষ খবরে জানা যায়, পারটেক্স গ্রুপের চেয়াম্যান আবুল হাসেমের অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। জানা যায়, পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেমের ছেলে শওকত আজিজের স্ত্রী ও পুত্রকে রাজধানীর গুলশান থেকে নারায়ণগঞ্জে তুলে নিয়ে যাওয়ার দুই দিনের মাথায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে বদলি করা হলো।
এর আগে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে হারুন অর রশীদ বলেন, শওকত আজিজের গাড়ি থেকে ২৮টি গুলি, ১ হাজার ২০০টি ইয়াবা বড়ি, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শওকত আজিজ ও তাঁর গাড়িচালকের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়েছে। গাড়িতে তাঁর স্ত্রী ও পুত্র ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের আটক করা হয়েছিল।
শওকত আজিজ আজ রোববার বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেছেন, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় হারুন অর রশীদ তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। সে কারণে তিনি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসে তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও ছেলে আনাব আজিজকে তাঁদের গুলশানের বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে যান। আর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা ক্লাব থেকে তাঁর গাড়িটি হারুন অর রশীদের লোকজন নিয়ে গিয়ে নাটক সাজান।
গুলশানের বাসায় নারায়ণগঞ্জ পুলিশের অভিযানের একটি ভিডিও শওকত আজিজ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ পুলিশের সদস্যরা শওকত আজিজের স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে হারুন অর রশীদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।