‘আমার প্রথম পিরিয়ডের দিনটি’

লাইফস্টাইল

image_168545.my-first-period-camp-mainমা হাসিমুখে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। বললেন, আজ থেকে আমার মেয়েটা নারী হয়েছে। আরো অনেক কিছু বোঝাতে থাকলেন মা। ধীরে ধীরে ভয়, জড়তা আর কান্না উবে গেলো মেয়েটির চোখ-মুখ থেকে। যেকোনো মেয়ের প্রথম পিরিয়ডের সময়ের ঘটনা। জীবনের প্রথম পিরিয়ডের নানা অভিজ্ঞতা রয়েছে নারীদের। দ্য গার্ডিয়ানে এসব নানা অভিজ্ঞতার কথা তুল ধরা হয়েছে যা অন্যদের মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণে দারুণ সহায়ক হবে। এখানে দেওয়া হলো কিছু নির্বাচিত অভিজ্ঞতার কথা।

১. বাবা নিয়েছিলেন দায়ভার : মা থাকতেন দূরে। হঠাৎ একদিন আমার দুই পা বেয়ে রক্তের ধারা দেখতে পেলাম। ব্যথাও করছিল। কিভাবে হলো চিন্তা করে বের করতে পারছিলাম না। মারা যাব মনে হচ্ছিল। দ্রুত মাকে ফোন দিলাম। মা বুঝিয়ে দিলেন যে আমার পিরিয়ড নামের বিষয়টি হয়েছে। বাবা যখন বাড়িতে এলেন, বললাম, বাবা আমার পিরিয়ড হয়েছে। অনেকবার খুক খুক করে কাশলেন তিনি। তারপর বেরিয়ে গেলেন এবং যাবতীয় স্যানিটারি আইটেম কিনে আনলেন। (অ্যানা মেনজিয়েস)
২. স্বাভাবিক দিন : বিষয়টি কতটা সাধারণ ও একই সাথে অসাধারণ হতে পারে তা জানালেন এক মা। আদরের ১১ বছরের মেয়েকে নিয়ে এক ছুটিতে ঘুরে রেড়াচ্ছেন তিনি। সবকিছু ঠিকঠাক। এক বেড়ানোর স্পটে বসলেন থিতু হয়ে। আশপাশে বেশ কয়েকজন মানুষও রয়েছেন। সবাই অপরিচিত, কিন্তু আন্তরিক পরিবেশ। হঠাৎ তার মেয়ে উত্তেজিত চেহারা নিয়ে তার কাছে দৌড়ে এলো। পরিবেশ নিয়ে খেয়াল নেই তার, জোরেশোরেই বললো, মা আমার পিরিয়ড হয়েছে। যারা শুনলেন, তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসলেন। তাদের হাসির ভাষা এমন ছিল, এটা দারুণ এক খবর। স্বাভাবিক এবং অপেক্ষার একটি দিন। মেয়ে আরো বললো, বাবাকে ঘটনাটি বলতে হবে। পরে মা তাকে এ বিষয়ে সুন্দরভাবে বিস্তারিত বুঝিয়ে দিলেন। (ফেইথ কনস্ট্যানটাইন)
৩. মেয়েদের আশ্রমের শিক্ষা : ছোটবেলায় মেয়েদের একটি আশ্রমে থাকতাম আমি। পিরিয়ড বিষয়ে বুঝতাম না। তবে সিনেমা দেখানো হয়েছিল আমাদের। সেখানে দেখে বুঝেছি, এভাবে পিরিয়ড হয় এবং ওই সময়টি বাইরে খেলা যাবে না বা পুকুরে গোসল করতে পারবো না। যখন মেয়েদের এমন হতো, তখন দৌড়ে আমরা স্যানিটারি টাওয়েল নিয়ে বাথরুমে চলে যেতাম। সেখানে আমরা একটি ম্যাগাজিন জোগাড় করে সেটা পড়তাম। (জেন)
৪. মায়ের টেলিপ্যাথি : প্রথম পিরিয়ডের ঘটনাটা আমার কাছে অদ্ভুত মনে হয়। বয়স ছিল ১১ বছর। একদিন স্কুল থেকে বাড়িতে চলে আসলাম। মাকে ফোন দিতেই তিনি যেন সব বুঝে ফেললেন। পিরিয়ড শুরু হওয়া থেকে আমি অদ্ভুত বোধ করতে লাগলাম। এ সবকিছু আমাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে দিলেন মা। (এলিজাবেথ টার্প)।
৫. দুপুরের চা : আমার পিরিয়ড শুরু হয় গানের ক্লাসে। খুব দ্রুত কোনোভাবে বাড়িতে চলে এলাম দুপুরে। মা চা খেতে খেতে বুঝিয়ে দিলেন, কি হবে আর কি করতে হবে। এখন থেকে একটি বিশেষ সময়ে আমাকে সাবধান থাকতে হবে। এ সময় আমার দেহে বিশেষ ঘটনা ঘটবে এবং স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে। আমার দুই বছরের ছোট বোন বিষয়টি জানলো। সে বললো, আমার স্তন বড় হলেও সমস্যা নেই। কিন্তু পিরিয়ডের জন্যে ভয় করে। ১১ বছর বয়সে ছোট বোনেরও পিরিয়ড শুরু হলো। তবে সে তো শিখেই ফেলেছে। এভাবে আমার মায়ের কাছ থেকে আমিও শিখেছিলাম। (এলিজাবেথ জনসন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *