গাজীপুর: গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মারতা উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সময়ে অতর্কিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীরা কর্তব্যরত শিক্ষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন কাগজ লিখিয়ে মুচলেকা নামা নিয়ে কয়েকটি রেজিষ্টার নিয়ে গেছে। এ সময় বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেনীরে নির্বাচনী পরীক্ষার সময় হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা আতঙ্কে পড়ে যায। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় সাংসদ ও সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল ১০ টার পর ওই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত সহকারী শিক্ষক মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, আজ ১০শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা উপলক্ষ্যে নির্বাচনী পরীক্ষা ছিল। সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার একটু আগে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির অনাস্থা দেয়া সভাপতি অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন ১০/১২ জন লোক নিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে অনধিকার প্রবেশ করেন। এ সময় তারা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাগজপত্র চায় ও তছনছ করে। এক পর্যায়ে আগন্তকেরা বিভিন্ন কাগজপত্রের খালি পাতায় তাদের ইচ্ছামত লিখিয়ে নিয়ে স্বাক্ষর নেয়। কয়েকটি মুচলেকা নিয়ে বিদ্যালয়ে দুটি রেজিষ্টারও নিয়ে যান অনধিকার প্রবেশকারীরা। শহীদুল্লাহ আরো জানায়, এই তান্ডবের সময় বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আগন্তকেরা বিদ্যালয় থেকে চলে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইব্রাহিম মিয়া জানান, তিনি অফিসিয়াল কাজে জেলা শহরের রানী বিলাস মনি সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ছিলেন। ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এই অবস্থায় তিনি বিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিযে শংকিত হয়ে স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন সবুজের নিকট যান। অতঃপর সাংসদকে জানিয়ে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং শ্রীপুর থানার ওসিকে ঘটনা জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ট্রেনিংএ আছি। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা অন্য কেউ কিছু জানায়নি। তবে স্কুলের জায়গা জমি নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ সমস্যা চলছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি লিয়াকত আলী জানান, স্কুলে হামলার বিষয়ে থানা পুলিশকে কেউ অবহিত করে নাই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মরতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন। সম্প্রতি কমিটির ১০ জন সদস্যের মধ্যে ৭জন অনাস্থা দিলে সভাপতি পদ নিয়ে সমস্যা তৈরী হয়। এ সময় স্থানীয় সাংসদ ইকবাল হোসেন সবুজ অনাস্থাজনিত কারণে বিদ্যালয়ের কর্মকান্ড চলমান রাখতে প্রহলাদপুর ইউনিয়ের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদকে অস্থায়ী কমিটির সভাপতি করে ডিও লেটার দেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনাস্থা সংক্রান্ত কাগজপত্র ও সাংসদের ডিও লেটার সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে মন্ত্রানলয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি লিখেন। এখনো সেই চিঠির চূড়ান্ত উত্তর আসেনি। ফলে এই বিদ্যােলয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটর আভ্যন্তরীন কোন্দলের জের ধরে আজকের অতর্কিত হামলা বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির পদ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্ধের কারণে বিদ্যালয়টির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশংকা তৈরী হয়েছে।