হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ শত অভাব অনটন দমাতে পারেনি কণিকা রানীকে। হাজারো কষ্টকে পেছনে রেখে এগিয়ে চলেছে কণিকা। ভর্তিযুদ্ধে পাস করে ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার সুযোগ ঠিকই পেয়েছে। কিন্তু তার পড়াশোনার পথে এখন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে টাকা।
কণিকা রানী লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব নওদাবাস গ্রামের ভবানী রায় ও কল্পনা রানীর তৃতীয় সন্তান। ২০১৭ সালে এসএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৪.৯১ এবং ২০১৯ সালে দইখাওয়া আদর্শ কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পায় সে। এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ১৫৯৩ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫৯তম স্থান অধিকার করেছে। কিন্তু পরিবার টাকা জোগাড় করতে না পারায় ভর্তি হতে পারছে না কণিকা।
কণিকার বাবা পেশায় দিনমজুর। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় করেন তা দিয়েই কোনো রকমে চলে চার সদস্যের পরিবার। তাদের ৫ শতক ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই।
সোমবার কথা হলে কণিকা রানী বলে, ‘শত কষ্টের মধ্যেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পাসও করেছি।
কিন্তু মনে হয় টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারব না। আমি পড়তে চাই, এজন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলে একদিন ঠিকই আমি অভীষ্ট লক্ষে¨ পৌঁছাতে পারব। ’
কণিকার বাবা ভবানী রায় বলেন, ‘কষ্ট করে মেয়েকে এইচএসসি পাস করাইছি। মেয়েটা আরও পড়তে চায়। কিন্তু সেটা মনে হয় আর হবে না। ’
মা কল্পনা রানী বলেন, ‘অভাবের কারণে এসএসসি পাস করার পর বড় মেয়েকে বাধ্য হয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। কণিকাকেও বিয়ে দিয়ে দিতাম। তবে তার ইচ্ছা পড়াশোনা করে ভালো কিছু করবে। কিন্তু তাকে ঢাকায় পড়ানোর মতো টাকা তো আমাদের নেই। ’
হাতীবান্ধার দইখাওয়া আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মোফাজ্জল হোসেন বলেন, কণিকা রানী বেশ মেধাবী ছাত্রী। তার পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।