রাতুল মন্ডল শ্রীপুর: এক খাস পুকুর নিয়ে উপজেলা প্রশাসন আর বন বিভাগের টানাটানি। পুকুরটি লিজও দিয়েছেন দু’জনকে! বন বিভাগ বলছে আমাদের পুকুর আর উপজেলা প্রশাসনের দাবি সরকারী খাস পুকুর কখনও বন বিভাগের হতে পারে না, আর লিজ দেয়ার কোন এখতিয়ার বন বিভাগের নেই। শ্রীপুরের ৩৩ শতাংশ জমির উপর একটি ছোট্ট খাস পুকুর নিয়ে প্রশাসন আর বন বিভাগের পাল্টাপাল্টি লিজ।
সরজমিেেন অনুসন্ধানে জানাযায়, উপজেলার পৌর শহরের শ্রীপুর রেঞ্জ অফিসের নিকটে বন বিভাগের খনন করা ৩৩ শতাংশ জমির উপর খাস পুকুরটি ইতিমধ্যে একই অর্থ বছরে দক্ষিণ ভাংনাহাটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও রঞ্জিত লাল চৌহান নামে দুই ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করেছেন।
উপজেলা জলমহাল কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১ মার্চ ২০১৯ ইং সালে উপজেলার শ্রীপুর মৌজার এসএ ২০৮৫ আরএস ৫০২২ নং দাগের ৩৩ শতাংশ জমির উপর খাস পুকুরটি দক্ষিণ ভাংনাহাটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি কাছে দশ হাজার টাকা সরকারী ইজারা মূল্যে দুই বছরের জন্য হস্তান্তর করেন।
শ্রীপুর রেঞ্জ অফিসের নাকের ডগায় ৩৩ শতাংশ জমির একই পুকুরটি ১৫ মে ২০১৯ ইং সালে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউছুপ দুই হাজার টাকায় ১ বছরের জন্য শ্রীপুর পৌর শহরের জৈনক শ্যামাপদ চৌহানের পুত্র রঞ্জিত লাল চৌহানের বরাবর হস্তান্তর করেন।
উপজেলা জলমহাল কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, সরকারী বিধিমালা ভঙ্গ করে ঐ খাস পুকুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রঞ্জিত লাল চৌহানের নিকট হস্তান্তর করেছেন, সরকারী খাস পুকুর বন বিভাগ কোন ভাবেই লিজ দিতে পারে না, এটা বিধি সম্পন্ন নয়। খাস পুকুর পাল্টাপাল্টি লিজে দেয়ার অভিযোগটি খতিয়ে দেখে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় এর সঠিক সমাধান করবো।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আনিসুল হক বলেন, বন বিভাগের জায়গায় খনন করা এই পুকুরের মালিকানা নির্ধারনের জন্য আদালতে বন বিভাগের পক্ষে মামলা করে, গত ১ বছর আগে আদালত বন বিভাগের পক্ষে রায় দেয়।তাই এই খাস পুকুরের মালিক বন বিভাগ। তিনি আরো জানান, বন বিভাগের পক্ষে লিজ দেয়া সরকারী খাস পুকুরটি বর্তমান মালিক রঞ্জিত লাল চৌহান।
বন বিভাগের নিকট থেকে খাস পুকুর লিজ নেয়া রঞ্জিত লাল চৌহান বলেন, একটি ছোট্ট পুকুর নিয়ে প্রশাসনের এমন দায়িত্বহীনতা জন্য সত্যি আমি ক্ষুব্ধ, আশা করি খুব দ্রæত বন বিভাগ আমার নিকট পুকুরটি বুঝিয়ে দিবেন।
অপর দিকে উপজেলা জলমহাল কমিটির কাছ থেকে লিজ নেয়া দক্ষিণ ভাংনাহাটি মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি সভাপতি আওয়ামিলীগ নেতা নূরে আলম মোল্লা বলেন সরকারের কাছ থেকে খাস পুকুর লিজ নিয়ে ইতিমধ্যে পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে। এই পুকুর অন্য আরেকজন নিজ নিয়েছে কি না এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মশিউর রহমান বলেন, সরকারী খাস পুকুর লিজ নিয়ে এধরণের অভিযোগ আপনার কাছে থেকে শুনলাম। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।