কারণে কিংবা অকারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়াটা এখন আমাদের সকলের দেহের জন্য অনেক পরিচিত একটি সমস্যা। অনেকের ওজন বৃদ্ধি পায় নির্দিষ্ট কোন কারণে আবার অনেকের ওজন অকারণেই বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে ওজন বৃদ্ধি পাওয়াটা আমাদের সকলের দেহের জন্যই বড় যন্ত্রণা। ওজন বৃদ্ধি পেলে যেমন দেখতে ভালো লাগেনা পাশাপাশি আমাদের দেহের জন্যও বাড়তি ওজন খুব ক্ষতিকর। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা ওজন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত থাকি। কিছুটা ওজন বৃদ্ধি পেলেই নিজের ওপর আমরা অত্যাচার করে থাকি ওজন কমানোর জন্য। তাই জেনে রাখুন কিছু কারণ যা ওজন বৃদ্ধি পেলে কখনোই করা উচিত না।
খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেবেন না
ওজন বৃদ্ধি পেলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়া উচিত না কারণ এতে করে কোন ভাবেই আপনার ওজন কমবেনা। গবেষনায় বলা হয়েছে যে প্রতি ঘন্টায় অল্প অল্প করে খাওয়া ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে। তাই খাওয়া একেবারে বন্ধ না করে একটি ভালো রুটিন বানিয়ে নিন এবং ঘণ্টা খানেক পর পর অল্প করে খান। তবে যাই খান না তা যেন স্বাস্থ্যকর খাদ্য হয়।
মানসিক ভাবে নিজেকে শাস্তি দেবেন না
মানসিক ভাবে নিজেকে শাস্তি দেয়া মানে ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে তার জন্য বার বার হতাশা প্রকাশ করা, ওজন বেড়েছে বলে আয়নার সামনে দাড়িয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলা, নিজেকে নিজে মোটা বলা এই কাজ গুলো না করাই ভালো কারণ এইরকম হতাশ হলে তা আপনার দেহের জন্যও ভালো না এবং আপনি মানসিক ভাবেও সমস্যায় ভুগতে পারেন। হীনমন্যতায় ভোগার মতোও সমস্যা আপনার হতে পারে। তাই সব দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সমস্যাটিকে সহজে মেনে নিন এবং ওজন কমানোর সঠিক নিয়ম গুলো কাজে লাগান।
নতুন জামা-কাপড় বানিয়ে সময় নষ্ট করবেন না
ওজন বেড়ে গিয়েছে , আগের কোন জামা এখন আর গায়ে ঠিক ভাবে লাগছেনা আর তাই নতুন নতুন জামা বানাতে হবে। কিন্তু এই কাজটি না করাই ভালো। কারণ মোটা হয়েছেন বলে নতুন জামা বানাচ্ছেন তারপর যখন কিছুদিন পর ওজন কমে যাবে তখন নতুন জামা গুলো কী করবেন? তাই এই কাজ করে টাকা ও সময় নষ্ট না করাই উত্তম। কীভাবে ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকবেন সেদিকে নজর দেয়া ভালো।
ওজন কমাতে অতিরিক্ত ব্যায়াম করবেন না
অনেকেই আছেন ওজন বেড়ে গিয়েছে বলে দিনরাত ব্যায়াম করে থাকেন। কিন্তু মনে রাখা ভালো যে ব্যায়াম করারও একটি পর্যাপ্ত সময় আছে। তাছাড়া আপনি যখন অনেক ব্যায়াম করবেন সেই সুত্রে আপনার ক্ষুধাও লাগবে বেশি তখন যদি পেট ভরে খেয়ে থাকেন ওজন তো কমবেই না বরং আরও বৃদ্ধি পাবে।
ঝোঁকের বসে ডায়েট করবেন না
ওজন বাড়তেই পারে আর তখন ওজন কমানোর জন্য ডায়েট অনেকেই করে থাকেন। কিন্তু ঝোঁকের বসে ডায়েট করবেন না। ঝোঁকের বসে ডায়েট মানে কিছুদিন খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে খুব সচেতন হয়ে গেলেন কিন্তু কিছুদিন পর আবার এই সচেতনতা ছেড়ে দিলেন, এই কাজ গুলো না করাই ভালো। ওজন বৃদ্ধি পায় খুব সহজে কিন্তু ওজন কমানো মোটেও সহজ কাজ নয়। তাই ধৈর্যের সাথে সবকিছু করুন।
আপনার ক্ষুধাকে কখনোই এড়িয়ে চলবেন না
আমরা অনেকেই আছি যারা ক্ষুধা লাগলে তা এড়িয়ে চলি। কারণ, ওজন বৃদ্ধি পাবে অথবা ওজন বেড়ে গিয়েছে বলে খাওয়া যাবে না। সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে নিজের দেহের কথা শুনতে হবে। ক্ষুধা লাগলে একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প করে কিছুক্ষণ পর পর খান। ওজন কমানোর জন্য একেবারে না খেয়ে থাকলে তা বরং আপনাকে আরও অসুস্থ করে তুলবে।
কী খেতে পারেন না তার ওপর নজরদারী করবেন না
অনেকেই খাবার খুব বেছে থাকেন, কেউ মাছ খায়না, কেউ মাংস খায়না আবার কেউ শাকসবজি খায়না, এক এক জনের খাবারের ধরন এক এক রকম। কিন্তু এই অভ্যাসটি মোটেও খুব ভালো অভ্যাস নয়। ওজন যদি কমাতেই হয় খাবার বাছাবাছি না করে সব কিছু খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আর আসল কথা হল ওজন কমাতে হলে আপনাকে ফলমূল ও শাকসবজি খেতে হবে বেশি করে।
ওজন বৃদ্ধি পাওয়া মানেই সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়
কিছুটা ওজন বাড়লেই আমরা অস্থির হয়ে যাই। মনে করি মানুষ কী বলবে, আমাকে ভালো দেখাচ্ছে না, পছন্দের খাবার গুলো খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে আরও কত কিছু। কিন্তু ওজন বৃদ্ধি পেতেই পারে নানা কারণে এটা কিন্তু আপনার দোষ না। আর যদি মনে করেই থাকেন ওজন বৃদ্ধি পেয়েছে নিজের জীবনযাপনের কারণে তাহলে সময় থাকতেই সচেতন হওয়া ভালো। তবে ওজন বাড়ার কারণে যে খুব দুশ্চিন্তা আর হতাশায় ভুগবেন আর ভাববেন যে সব শেষ হয়ে গেল ওজন বাড়ার কারণে, এই ধারনা গুলো ভুল। মনে রাখবেন, সুস্থ থাকতে ও ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখতে কিন্তু খুব কষ্ট করতে হয়না।